কুড়িগ্রামে ভিটেবাড়ি হারানো মানুষের আর্তনাদ

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম :

ভোরের আলো ফোটার আগেই নদীর পাড়ে জড়ো হন কিছু মানুষ। আতংক নদী ভাঙনের। ভাঙনের কবলে পড়ে কেউ কেউ ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন নিরাপদে। কেউ আবার কেটে নিচ্ছেন গাছ। এ চিত্র এখন কুড়িগ্রামের ভাঙন কবলিত এলাকার।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্ষা শেষ হলেও থামছে না নদ-নদীর ভাঙন। উজানের ঢলে সামান্য পানি বাড়লেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ছে পাড়। দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র আর ধরলার তীব্র স্রোতে ঘর-বাড়ি, গাছপালা, ফসলি জমি সবই বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে। গত এক সপ্তাহে বসতভিটা হারিয়েছে অন্তত ৫০টি পরিবার। আরও শতাধিক পরিবার ভাঙনের মুখে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

 

কুড়িগ্রাম জেলা সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের বানিয়া পাড়া এলাকার আমজাদ আলী ও এরশাদ আলী বলেন, আমাদের ঘর নদীর তীর থেকে অনেক দূরে ছিল। গতবারও বাঁচলাম, ভেবেছিলাম এবার রেহাই পাব। কিন্তু এক রাতেই সব গিলে নিল নদী।

 

ওই এলাকার মতো অনেক মানুষ এখন ঘরহারা। কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে ঠাঁই নিয়েছেন, কেউবা খোলা আকাশের নিচে খড়ের ছাউনি বানিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

 

কুড়িগ্রাম জেলা সদর উপজেলার সবুজপাড়া, যাত্রাপুরের বানিয়াপাড়া, নাগেশ্বরীর বল্লভের খাস, ফুলবাড়ী ও রৌমারী উপজেলায় অন্তত ১০টি স্থানে নতুন করে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন।

 

প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও নদীর পাড় গিলে খাচ্ছে মানুষ জনের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছর কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, ধরলা, তিস্তা ও গঙ্গাধরের ভাঙনে বসতভিটা হারিয়েছে দুই সহস্রাধিক পরিবার। ভাঙন কবলিত অনেকের দাবি, বছর বছর একই চিত্র, একই প্রতিশ্রুতি কিন্তু স্থায়ী সমাধান নেই।

 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাকিবুল হাসান বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে। তবে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম। পর্যাপ্ত বরাদ্দ পেলে স্থায়ী ভাবে হয়তো কাজ করা যাবে।

এই বিভাগের আরো খবর