‎সিংগাইরে মাঠ দখল করে বিল্ডিং নির্মান, ব্যাপক সমালোচনা

‎মানিকগঞ্জের সিংগাইরে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে দোকানের জন্য ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী এক নেতা ও জৈনক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। বিষয়টা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা ঝড় বইলেও প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন তারা নাকি জমিটি বিক্রি করে দিয়েছেন। তবে সরকারি স্কুলের মাঠ বিক্রি করার তাদের কোন এখতিয়ার আছে কিনা এ বিষয়ে তারা কোন জবাব দিতে পারেননি।

‎ঐ বিএনপি নেতা হচ্ছেন মানিকগঞ্জ বিএনপির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও সিংগাইর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বাবুল হোসেন এবং আরেকজন দৈনিক ইত্তেফাকের সিংগাইর উপজেলা প্রতিনিধি আওয়ামী পন্থী সাংবাদিক মানবেন্দ্র চক্রবর্তী।

‎তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না স্থানীয় প্রশাসনও। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান সোহাগ জানিয়েছেন, স্কুলের মাঠটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকায় তার কিছু করার নেই। তবে তিনিঁ স্কুল কর্তৃপক্ষকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছেন যে স্কুল সরকারি করন হবার আগেই দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। তাই তারা সেখানে তাদের ভবন নির্মাণ করতে পারেন।

‎নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয়রা বলছেন, মূলত বিএনপি নেতা বাবুল হোসেন দলের নাম ভাঙিয়ে মাঠ দখল করে দোকান তুলছেন। যা একেবারেই ঠিক হচ্ছে না। দেশের এই মুহূর্তে বিএনপির মত দলে থেকে তিনি এমন ন্যক্কারজনক কাজ করছেন, আর তিনি সিনিয়র নেতা বলে কেউ কিছু বলতেও সাহস পাচ্ছেন না। অন্যদিকে সাংবাদিক মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সরকারের দালালি করেছেন, এখন তিনি বিএনপি’র নেতৃবৃন্দদের সাথে মিশে জবরদখলে লিপ্ত হয়েছেন।

‎সরে জমিনে জানা যায়, ২০১৭ সালের সিংগাইর থানার সামনে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হোসেন জমিটি বরাদ্দ নিয়েছিলেন। তবে বরাদ্দ বৈধ না থাকায় তৎকালীন সময়ে তিনি স্থানীয় এলাকাবাসীর তীব্র প্রতিরোধের মুখে সেখানে কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে পারেননি। যদিও শিক্ষক আবুল হোসেন আওয়ামী লীগ পন্থী ছিলেন এবং তার স্ত্রী মহিলা লীগ নেত্রী সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ারা খাতুন সাবেক এমপি মমতাজের পক্ষের লোক ছিলেন।

‎তার অবৈধ লিজ নেওয়া জমি নাকি তিনি এখন সাংবাদিক মানবেন্দ্র চক্রবর্তী এবং বিএনপি নেতা বাবুল হোসেন এর কাছে পানির দরে বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন শিক্ষক আবুল হোসেন বলছেন তৎকালীন সময়ে তিনি নাকি টাকার জন্য স্থাপনা নির্মান করতে পারেননি।

‎তবে মূল ঘটনা হচ্ছে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার পর, বরাদ্দ দেয়া জায়গা খালি রেখে থানার সামনে দিয়ে মাঠের অংশে ওয়াল নির্মাণ করা হয়। এবং স্কুলটি ও স্কুলের সম্পত্তি ২০২৩ সালে সরকারি করণ করা হয়। ঐ বিএনপি নেতা এবং ঐ সাংবাদিক এখন সেই দেয়াল ভেঙে সরকারি জায়গা দখলে নিয়ে সেখানে ভবন নির্মাণ করছেন।

‎স্থানীয়দের প্রত্যাশা, সরকারি জায়গা দখল ছেড়ে দিয়ে যেন তারা তাদের ভবন নির্মাণ করেন।

‎এবিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিজ্ঞ এডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট মোঃ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের কোটি টাকার সম্পত্তি পানির দামে হস্তান্তর বিষয়টি একুশ শতকের চরম লজ্জা এবং দূর্নীতি। এর দায়ভার আমরা কেউ এড়াতে পারিনা। সিংগাইর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী একমাত্র এই খেলার মাঠটির ভিতরে স্থাপনা হওয়ায় মাঠটি তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য হারিয়ে সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। মাঠটি রক্ষায় তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

এই বিভাগের আরো খবর