চরফ্যাশন প্রতিনিধি :
ভোলার চরফ্যাশনের দক্ষিণ আইচায় মেঘনা, বুড়া গৌরাঙ্গা নদীতে অভিযান চালিয়ে ১২ ড্রাম গলদা ও বাগদা চিংডি রেণু জব্দ করে তা নদীতে অবমুক্ত করেছে মৎস্য বিভাগ।
শনিবার রাতে চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার চরমানিকা ইউনিয়নের চরকচ্ছপিয়া মেঘনা, বুড়া গৌরাঙ্গা নদী থেকে এসব চিংডি রেণু জব্দ করেন চরমানিকা কোস্টগার্ড সদস্যরা। পরে মৎস্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে চরকচ্ছপিয়া নদীতে অবমুক্ত করা হয়।
চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অবৈধ গলদা চিংড়ির রেণু পরিবহন মৎস্য সম্পদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, এবং এটি আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ।গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চরকচ্ছপিয়ামেঘনা, বুড়া গৌরাঙ্গা নদীতে একটি মৎস্য ট্রলারে অভিযান চালিয়ে প্রায় চার লাখ গলদা ও বাগদা চিংডরি রেণæ (১২ ড্রাম) জব্দ করা হয়। বাজারে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা। পরে উদ্ধারকৃত রেণুগুলো রাতেই উপজেলা মৎস্য অফিসের ক্ষেত্র সহকারী কামাল হোসেন, দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশ এবং কোস্টগার্ডের উপস্থিতিতে এসব রেণু নদীতে অবমুক্ত করা হয়।
তিনি আরও জানান, চিংডি রেণু সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
এদিকে চরকচ্ছপিয়ার রেণু ব্যবসায়ী ছাবের হোসেন, রাসেদ এবং জাকির জানান, কয়েকদিন আগে ধারদেনা করে গলদা ও বাগদা চিংডরি রেণু ব্যবসা শুরু করেছিলেন। প্রথম চালান খুলনার মোকামে পাঠানোর পথে কোস্টগার্ড অভিযানে তাদের পাঁচ ব্যবসায়ীর রেণু জব্দ করে নদীতে অবমুক্ত করে। এতে তাদের প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তারা। ভবিষ্যতে আর এই ব্যবসায় না থাকারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এসব ব্যবসায়ীরা।
জানাযায় বেশকিছু দিনযাবত চরফ্যাশনে মেঘনাসহ তেঁতুলীয়া নদীতে প্রকাশ্যে অবাধে শিকার হচ্ছে বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেনæ পোনা। উপজেলার ২০টি ঘাটে প্রায় সহস্রাধিক ভ্রাম্যমাণ জেলের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে ৫ সিন্ডিকেট এসব রেনু পোনা পাচার করছে ঢাকা, খুলনা, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। পরোক্ষভাবে এই সিন্ডিকেটের আরো ডজনখানেক সদস্য রয়েছে। তাদের নাম জানা যায়নি। মৎস্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তৎপরতা থাকায় প্রতিদিন চিংড়ির রেনæ পোনার কিছুটা হলেও তমেছে ।এই রেনু পোনা পাচার কারিদের এখনি না থামালে চিংড়ির রেনæ পোনার পাশাপাশি ধ্বংস হবে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনাও।
অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেট চক্রের মুল হোতা মৎস্য আড়ত মালিক মাদ্রাজ এলাকার ইউপি সদস্য রাসেল, পাঁচ কপাট এলাকার মো ইউনুস, ঘোষের হাট এলাকার জাহাঙ্গীর, চরমানিকা ইউনিয়নের চর কচ্চপিয়া এলাকার জাকির ফকির ও মো ছাবের থানা পুলিশ এবং কোস্টগার্ডের ম্যানেজ করে নাম মাত্র দাদন দিয়ে ভ্রাম্যমাণ জেলেদের দিয়ে শিকার করাচ্ছেন চিংড়ি রেনæ পোনা। তারা রাতের আঁধারে কোটি টাকার এসব পোনা পাচার করেন।
চরমানিকা কোস্টগার্ড জানান,দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় তারা ২৪ ঘণ্টা টহল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে, যার মাধ্যমে উপক‚লীয় ও নদী তীরবর্তী এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানায় কোস্ট গার্ড।