নিজস্ব প্রতিবেদক।।
প্রতিবন্ধী কোটায় সুমনকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশ হাইকোর্টের।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৪ এর লিখিত ও মৌখিক পরিক্ষার ফলাফল অনুযায়ী ১০% প্রতিবন্ধী কোটা পূরন করে রীটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ না দেওয়ায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে এবং লিখিত ও মৌখিক পরিক্ষার ফলাফল অনুযায়ী রীটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট পিটিশনের চূড়ান্ত শুনানী শেষে অদ্য ১৮/০৬/২০২৩ খ্রি. তারিখ মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের মাননীয় বিচারপতি জনাবা নাইমা হাইদার এবং বিচারপতি জনাবা কাজী জিনাত হক মহোদয়ের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ পূর্বে জারীকৃত রুল নিষ্পত্তি পূর্বক রিটকারী মোঃ সুমন’কে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশনা দিয়ে রায় প্রদান করেন।
রীটে প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সহ মোট ৫ (পাঁচ) জনকে বিবাদী করা হয়েছিল।
রিটকারী মোঃ সুমন-এর পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া অপর দিকে রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
রিটকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন রিটকারী মোঃ সুমন একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যাক্তি, তিনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত বিগত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ খি. তারিখের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রতিবন্ধী কোটায় নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষায় অংশগহন করে সফলভাবে উত্তির্ণ হন এবং viva voce পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ২০১৮ সালে উক্ত নিয়োগ পরীক্ষার চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়, যেখানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৭/০৩/১৯৯৭ তারিখের পরিপত্র অনুযায়ী নির্ধারিত ১০% প্রতিবন্ধী কোটা অনুযায়ী মোঃ সুমন’কে সুযোগ প্রদান করা হয়নি। অথচ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯ এর ৮ এর ২ বিধিতে বলা হয়েছে “উপ-বিধি (২) এর দফা (গ) তে উল্লেখিত মহিলা, পোষ্য ও পুরুষ কোটা পূরণের ক্ষেত্রে, আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন বিধি বা সরকারি সিদ্ধান্তে কোন বিশেষ শ্রেণির কোটা নির্ধারিত থাকিলে উক্ত কোটা সংক্রান্ত বিধান অনুযায়ী নিয়োগ করিতে হইবে” এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ এর ধারা ৩৫ এর ১ এ বলা হয়েছে “আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যোগ্যতা থাক সত্ত্বেও, প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী, উপযোগী কোন কর্মে নিযুক্ত হইতে কোন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বঞ্চিত বা তাহার প্রতি বৈষম্য করা বা তাহাকে বাধাগ্রস্ত করা যাইবে না” এবং আমাদের দেশের সংবিধান এর অনুচ্ছেদ ২৮ এর ৪ এ উল্লেখ্য আছে যে “Nothing in this article shall prevent the State form making special provision in favour of women or children or for the advancement of any backward section of citizens” অর্থাৎ পিটিশনার নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৪ এর ২০১৮ সালে প্রকাশিত চুড়ান্ত ফলাফলে ১০% প্রতিবন্ধী কোটা পূরন করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার বৈধ অধিকারী, কিন্তু চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের সময় উক্ত বিধি সমূহ অনুযায়ী প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের ১০% কোটা অনুসরণ না করায় রিটকারী উক্ত রীট পিটিশন দায়ের করেন। অদ্য উক্ত রিটের চুড়ান্ত শুনানী শেষে মহামান্য আদালত রিটকারী মোঃ সুমন’কে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশনা দিয়ে রায় প্রদান করেছেন।
আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া আরও বলেন, আমি রিটকারী মোঃ সুমন-এর পক্ষে সম্পূর্ণ বিনা ফি-তে আইনি লড়াই লড়েছি এবং যদি ভবিষ্যতেও কখনো প্রয়োজন হয় আমি তার পক্ষে সম্পূর্ণ বিনা ফি-তে আইনি লড়াই লড়বো।