শেখ হাসিনাসহ তিনজনের রায় ঘোষণার তারিখ ১৩ নভেম্বর

সময়ের চিত্র ডেস্ক:

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। মামলার রায় ঘোষণার দিন আগামী ১৩ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল এই তারিখ ঘোষণা করেন।

এদিন প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সমাপনী বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “এই হত্যাযজ্ঞ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত হয়েছে। শেখ হাসিনাসহ আসামিদের দোষী সাব্যস্ত না করলে শহীদ ও আহতরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।”

এর আগে বুধবার রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষ থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে তাদের খালাসের আবেদন জানান। তিনি দাবি করেন, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন দায় এড়াতে রাজসাক্ষী হয়েছেন।

ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, গত ৩ আগস্ট মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয় এবং ৬ কার্যদিবসে প্রসিকিউশন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে তিন দিন ধরে যুক্তিতর্ক চলে, যা শেষ হয় বুধবার (২২ অক্টোবর)।

রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা আন্দোলন দমনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেননি। প্রসিকিউশন অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে।

অন্যদিকে চিফ প্রসিকিউটর শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। পাশাপাশি শহীদ ও আহতদের ক্ষতিপূরণের জন্য আসামিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের আবেদনও করেন। তবে রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি মামুনের বিরুদ্ধে শাস্তির আবেদন করা হয়নি।

মামলায় মোট ৮৪ জন সাক্ষীর তালিকা থাকলেও ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন।

বুধবার বিকেলে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, “প্রতিরক্ষা পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার আমরা চূড়ান্ত বক্তব্য দেব। এরপরই আদালত রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করবেন।”

উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়, যার রিপোর্টে রয়েছে প্রায় ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠা দালিলিক প্রমাণ, সাক্ষ্য ও তথ্যসূত্র।

এই বিভাগের আরো খবর