৪৪ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের প্রত্যাবর্তন

সময়ের চিত্র ডেস্ক:

দীর্ঘ বিরতির পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (চাকসু) আবারও নেতৃত্বে ফিরেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। ৪৪ বছর পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে শিবিরসমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ সভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস)সহ মোট ২৪টি পদে জয়লাভ করেছে।

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকসু নির্বাচন সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। তার আগে ১৯৮১ সালের নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সর্বশেষ নেতৃত্বে আসে। সেই নির্বাচনে ভিপি ছিলেন জসিম উদ্দিন সরকার এবং জিএস ছিলেন আবদুল গাফফার। এরপর থেকে দীর্ঘ সময় শিবির ক্যাম্পাসে সক্রিয় রাজনীতির বাইরে ছিল।

 

২০১৪ সালে সংগঠনটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর প্রায় এক দশক সংগঠনটি নিস্ক্রিয় ছিল। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে পুনরায় প্রকাশ্যে রাজনীতিতে ফিরে আসে তারা। এর এক বছরের মধ্যেই ২০২৫ সালের চাকসু নির্বাচনে বড় ধরনের বিজয় পেয়ে আবারও আলোচনায় এসেছে সংগঠনটি।

 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টায় সপ্তম চাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, “নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রার্থী ও ভোটারদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।”

 

ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ইতিহাস বিভাগের এমফিল শিক্ষার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শিবির সভাপতি মো. ইব্রাহিম হোসেন। তিনি পেয়েছেন ৭,৯৮৩ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪,৩৭৪ ভোট।

 

জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব পেয়েছেন ৮,০৩১ ভোট, তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২,৭৩৪ ভোট। সাঈদ ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক।

 

মোট ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টিতে জয় পেয়েছে শিবির-সমর্থিত প্রার্থীরা। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল জয় পেয়েছে শুধু সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে। এজিএস হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আইয়ুবুর রহমান (৭,০১৪ ভোট), যেখানে শিবিরের প্রার্থী সাজ্জাদ হোছন পেয়েছেন ৫,০৪৫ ভোট।

 

এছাড়া সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয়লাভ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তামান্না মাহবুব।

 

১৯৭০ সাল থেকে শুরু করে এবার পর্যন্ত মোট সাতবার চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে—১৯৭০, ১৯৭২, ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮১, ১৯৯০ এবং ২০২৫ সালে। দীর্ঘ তিন দশক পর অনুষ্ঠিত এবারের নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বেছে নিয়েছে।

এই বিভাগের আরো খবর