সময়ের চিত্র ডেস্ক:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও নিরাপদভাবে সম্পন্ন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব তথ্য জানান।
উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে মাঠ প্রশাসনের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ওসিদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেকোনো বিশৃঙ্খলা বা সহিংসতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে আইনের আওতায় এনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি জানান, নির্বাচনে নিরাপত্তা জোরদারে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য বডি ওর্ন ক্যামেরা সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি টহল কার্যক্রম ও গোয়েন্দা নজরদারি আরও জোরদার করা হচ্ছে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের মধ্যে যাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ছিল, তাদের এ নির্বাচনে দায়িত্ব না দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন অবনত না হয়, সে দিকেও বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।
নির্বাচনি প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা জানান, প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে তিন দিন মেয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণ ২৮টি ব্যাচে সারাদেশের ১৩০টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে এবং আগামী ১৫ জানুয়ারি ২০২৬ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এছাড়া আনসার ভিডিপি সদস্যদের জন্যও ‘প্রাক-নির্বাচনী প্রশিক্ষণ’ আয়োজন করা হয়েছে, যার আওতায় ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রে মোট ৫ লাখ ৮৫ হাজার সদস্য প্রশিক্ষণ পাবেন।
তিনি বলেন, “বিজিবির ১১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য নির্বাচনি দায়িত্বে থাকবে, যার ৬০ শতাংশ প্রশিক্ষণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিজিবির সব প্রশিক্ষণ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।” এছাড়া নির্বাচনে প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “কে কী চায় সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। আমি ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে কোনো পরিকল্পনায় নেই—আমার সন্তানরা সবাই দেশে আছে।”
অভিযুক্ত সেনা সদস্যদের বিচার বিষয়ে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।”
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মোঃ খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা।