জবি প্রতিনিধি:
চার দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনাসংলগ্ন কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে বর্তমান-সাবেক শিক্ষার্থীদের সমাবেশ সকাল ১০টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে তা শুরু হয় বেলা সাড়ে ১১টা থেকে।
সমাবেশে যোগ দিতে বাসে করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আসছেন। মৎস্য ভবন থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আর পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তাদের জুমার নামাজের পর কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অনশনস্থলে গণঅনশনে বসার কথা রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিনের বেলা ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ পর বৃহস্পতিবার মাঝরাতের কিছু আগে নতুন এ কর্মসূচির ডাক দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার পরে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন জানান, টানা অবস্থানের কারণে শিক্ষার্থীদের অনেকে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। এ কারণে সমাবেশের সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়।
সকালে কাকরাইল মসজিদের সামনে সমাবেশ শুরু আগে সংবাদ সম্মেলন করেন অধ্যাপক মো. রইছ উদদীন।
তিনি বলেন, “ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র এই তিনদিকের রাস্তাটি আমাদের শিক্ষার্থীরা জড়ো হওয়ায় জনদুর্ভোগের কারণ হয়েছে, সেটা জানি। আমাদের দাবি যদি যৌক্তিক হয়, সেটাতো প্রথমদিনই সরকার আন্তরিক হলে নিরসন করতে পারতো। কিন্তু সেটা এখনও নিরসন হয়নি।”
‘জগন্নাথ অবহেলিত, বঞ্চিত ও নিষ্পেষিত, এটা ঐতিহাসিকভাবে সত্য’ বর্ণনা করে এই অধ্যাপক বলেন, “ এই বৈষম্য নিরসনের জন্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দলমত নির্বিশেষে সবাই একাট্টা। আমাদের দাবি পূর্ণাঙ্গরুপে মানতে হবে। আমরা এমন একটি পর্যায়ে উপনীত হয়েছি, আর পেছনে যাওয়ার সুযোগ নেই।”
টানা ৪৮ ঘন্টা আন্দোলনের কারণে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়ে অধ্যাপক রইছ বলেছেন, কোনো ধরনের সুস্পষ্ট ঘোষণা ছাড়া তারা ‘রাজপথ থেকে একচুলও সরবেন না’।
“আমাদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত যে সরকার আমাদের হুমকি ধামকি দেয় কিংবা স্টিমরোলারও চালানোর চেষ্টা করে, তাহলে আমরা রুখে দেব। যদি সরকারি কোনো এজেন্সির লোক তুলে নিয়ে যায় তবুও আন্দোলন চালিয়ে যাবো।”
তিন দফা দাবিতে শুরু হওয়া এ আন্দোলন পরে চার দফায় রূপ নেয়।
শিক্ষার্থীদের চার দাবির মধ্যে রয়েছে-
১. আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে;
২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে;
৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে;
৪. শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।