পঞ্চগড়ের সহিংসতায় বিএনপি-জামায়াত জড়িত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সময়ের চিত্র ডেস্ক: পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জলসাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতায় বিএনপি-জামায়াত জড়িত বলে উল্লেখ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া একজন বিএনপি নেতা স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন বলে জানান তিনি।সোমবার সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা শেষে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘জামায়াতের কর্মী ও বিএনপির নেতারা জড়িত হয়ে পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানটি (সালানা জলসা) করতে বাধা দেন। একপর্যায়ে তাদের বাড়িঘরে আগুন দেয়া হয়। যেখানে অনুষ্ঠান হচ্ছিল সেখানেও আগুন দেয়া হয়। এতে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের এক সদস্য মারা যান। শিবিরের এক নেতা, যিনি সেখানে গিয়েছিলেন, তিনিও এ ঘটনায় আহত হয়ে পরে মারা যান।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পঞ্চগড়ের ওই ঘটনায় ৭টি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৮১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বিএনপির নেতা ফজলে রাব্বী আছেন। তিনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন- তারা অনুষ্ঠান বন্ধ করার জন্য এসেছিলেন। ঘটনার নেপথ্যে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।’

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘এই মুহূর্তে সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এখন মামলা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে পুলিশের কোনো ব্যর্থতা আছে কি না সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন যারা ফেসবুক তথা সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করে গুজব ছড়াবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবের আগে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ২৬ মার্চ সাভারে যাবেন। বিদেশি কূটনীতিকরাও সেখানে যাবেন। তাদের এই যাওয়ার পথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যাতে সমুন্নত থাকে তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যেখানে যা প্রয়োজন, রাস্তাঘাট ব্যবস্থা সুন্দর করা, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যক্রম বৃদ্ধি করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এ দুটি দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে কোনো হুমকি আছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা জানিয়েছে তাদের কাছে এমন কোনো তথ্য নেই। তবে তথ্য থাকুক না-থাকুক তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

সারা দেশের মানুষ যাতে গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতা দিবস পালন করতে পারেন সে জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

তিনি জানান, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে এক মিনিটের জন্য সব ধরনের আলো বন্ধ হয়ে যাবে। রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত এই ব্ল্যাকআউট থাকবে।

নির্মাণ কাজ চলায় জাতীয় স্টেডিয়ামে ২৬ মার্চের কুচকাওয়াজ বন্ধ থাকবে। তবে বঙ্গভবনের রিসিপশন (অভ্যর্থনা) হবে বলে জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকায় আলোকসজ্জা থাকবে। প্রত্যেকবারের মতোই এবার সেটা করা হচ্ছে। ২৫ মার্চ রাতে আলোকসজ্জা হবে না। কিন্তু ২৬ মার্চ আলোকসজ্জা থাকবে। হাসপাতাল আলোকসজ্জার বাইরে থাকবে।

প্রতিবারের মতো এবারও কারাগার, হাসপাতাল, এতিমখানা, শিশুপল্লীর মতো জায়গাগুলোতে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

এই বিভাগের আরো খবর