নৌ অর্থনীতি প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

জাতির পিতার জন্ম ও শৈশব কেটে ছিল বাইগার নদীর তীরবর্তী তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার( বর্তমানে জেলা) পাটগাতি ইউনিয়নের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে।পৈত্রিক বসতবাড়ি নদীর সন্নিকটবর্তী হওয়ার কারণে পারিবারিক চলাচলের অন্যতম মাধ্যম ছিল নৌপথ। সেজন্য জলজ যানবাহন বঙ্গবন্ধু পছন্দ করতেন।স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু তদানীন্তন নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় নিজ দায়িত্বে রেখে ছিলেন।তিনি ভবিষ্যতে নৌ বাণিজ্য এবং এর সাথে বিশাল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে সমুদ্র বন্দরগুলোর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।সদ্য স্বাধীন দেশের চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের চ্যানেলকে মাইন মুক্ত করার জন্য তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তা নিয়েছিলেন। উল্লেখ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম বন্দরকে অকেজো করার জন্য এর চ্যনেলে মাইন পুঁতে রেখে ছিল।

নদীমাতৃক বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে নৌ সেক্টর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নৌপথকে নিরাপদ, যাত্রীবান্ধব,আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ ব্যবস্হাকে ঠেলে সাজানো হয়েছে । এ লক্ষ্যে নৌ বন্দরসমূহের আধুনিকায়ন, নৌপথ সংরক্ষণ, নৌসহায়ক যন্ত্রপাতি স্হাপন, নৌপথে নৌযান উদ্ধারকারী আধুনিক যন্ত্রপাতি সংবলিত জাহাজ সংগ্রহ, নৌপথের আধুনিকায়ন,দেশব্যাপী নদীর তীরভূমি রক্ষা, তীরভূমিতে পর্যটন ব্যবস্হা গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণে মানসম্মত যাত্রী সেবা এবং নিরাপদ পণ্য পরিবহণ নিশ্চিত করতে সরকারি বেসরকারি সকল কর্তৃপক্ষ আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ খাতের সাথে জড়িত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব এখন সকলেই অনুধাবন করতে পারছেন। সরকার উপকূলীয় সার্ভিসের সক্ষমতা বাড়াতে ইতিমধ্যে দুইটি অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী জাহাজ ‘ এমভি তাজউদ্দিন আহমদ ‘ এবং’ এমভি আইভি রহমান’ নৌবহরে যুক্ত করেছে। এছাড়াও নির্মাণাধীন রয়েছে আরও ৩৫ টি জাহাজ, যা দ্রুতই এ বহরে যুক্ত হবে। এ জাহাজগুলো চট্টগ্রাম – সন্দ্বীপ – হাতিয়া- বরিশাল রুটে পরিচালনার মাধ্যমে বন্ধ থাকা এ রুটটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতো গেল সরকারি উদ্যোগ। এর পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দেশে-বিদেশে নির্মিত অত্যাধুনিক নৌযান সংগ্রহ করে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পদ্মা সেতু জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত হওয়ায় দক্ষিণ অঞ্চলের বিশেষ করে বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোতে মানুষের দীর্ঘদিনের নৌযানে চলাচলের যে অভ্যাস গড়ে ওঠেছিল তা পরিবর্তন হয়েছে। ঐ অঞ্চলের মানুষ এখন নদীপথে যাতায়াতের চেয়ে সড়কপথে যাতায়াতে বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। ঐ অঞ্চলে চলাচলকারী বেশ কিছু নৌযান রুট পরিবর্তন করে অন্য রুটে চলাচল করছে। অভ্যন্তরীণ যাত্রী ও মালামাল পরিবহণ ব্যবস্হা সচল রাখার স্বার্থে প্রায় ৩১৬ কিলোমিটার নৌপথ খনন করা হয়েছে। বিদ্যমান নদীসমূহের নব্যতা রক্ষায় ২২৬ লক্ষ ঘন মিটার নৌপথ সংরক্ষণ খনন কাজ করা হয়েছে। নৌপথে যাত্রী ও মালামাল পরিবহণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানীগঞ্জ সোনাগাজী, বেতুয়া, পটুয়াখালী, গাজীপুর নতুন নদী বন্দর ঘোষণা করা হয়েছে। ৪৫৭ টি ঘাট পয়েন্ট ইজারার মাধ্যমে ১০৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। দেশে মোট নদ নদীর দৈর্ঘ্য কম বেশি ২৪ হাজার কিলোমিটার। এরমধ্যে ৬ হাজার কিলোমিটারে নৌযান চলাচল করতে পারে। তবে শুষ্ক মৌসুমে কম বেশি সাড়ে চার হাজার কিলোমিটারে নৌযান চলাচলের সুযোগ থাকে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কম বেশি ৩১.৫ কোটি যাত্রী এবং ৫৫৯.৪৫ লাখ মেট্রিক টন পণ্য অভ্যন্তরীণ নৌপথে পরিবহণ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৬ হাজার ২০১ টি দুর্ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে সড়ক পথে ৫ হাজার ৫১৬ টি এবং নৌপথে ২০৩ টি দুর্ঘটনা ঘটে। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় ৭ হাজার ৮৫৫ জন এবং নৌ দুর্ঘটনায় মারা যায় ২০৩ জন। নৌ দুর্ঘটনায় প্রধান কারণ অন্য নৌযানের সাথে সংঘর্ষ (৫৪%), এরপর বৈরী আবহাওয়া (২৩%) বাকি ২৩ শতাংশ দুর্ঘটনার কারণ অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ, আগুন, বিস্ফোরণ এবং নৌযানে তলা ফেটে যাওয়া। এ থেকে প্রমাণীত হয় সড়কের তুলনায় নৌপথ অপেক্ষাকৃত বেশি নিরাপদ।

প্রতিবছর কম-বেশি ছয় হাজার পণ্যবাহী সমুদ্রগামী জাহাজ পণ্য পরিবহণে দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোতে আসে। এসব সমুদ্রগামী জাহাজের কম বেশি ৯২ শতাংশ চট্টগ্রামে বন্দর ব্যবহার করে থাকে। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে সমুদ্রগামী জাহাজগুলোর মোংলা বন্দর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এ বন্দরে গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম সময়ে নিরাপদে পণ্য পরিবহণসহ অন্যান্য সুযোগ বৃদ্ধি এবং খরচ কম হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর ব্যবহারে সাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। যার ফলে এ বন্দরে জাহাজের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর ১৩৪ বছরের রেকর্ড ভেঙে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩২ লক্ষ ৫৫ হাজার ৩৫৮ টিই ইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ও ১১ কোটি ৮১ লক্ষ ৭৪ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করছে। এসময়ে ৪ হাজার ২৩১ টি Vessels চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার জন্য এর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্য সরকার ইতিমধ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ। ইতিমধ্যে এ কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। টার্মিনালটি বাৎসরিক ৪.৫ লাখ টিই ইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে সক্ষম।চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ড সমূহের ধারণ ক্ষমতা ইতিমধ্যে ৪৯ হাজার ০১৮ TEUs থেকে ৫৩ হাজার ৫১৮ TEUs এ উন্নীত করা হয়েছে। বর্তমান ও ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এবং কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৯০ হাজার ৫২১ বর্গমিটার ও ৪ হাজার টিই ইউএস ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন নিউমুরিং ওভারফ্লো কন্টেইনার ইয়ার্ড চালু হয়েছে। করোনা অতিমারির সময় বিশ্বের অনেক সমুদ্র বন্দরের হ্যান্ডলিং কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও চট্টগ্রাম বন্দর এক মূহুর্তের জন্যও বন্ধ ছিল না। বন্দরে কোনো জাহাজ জট ছিল না। চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্হাপনাগত আধুনিকায়নের ফলে বর্তমানে কন্টেইনার ডুয়েল টাইম গড়ে কম-বেশি নয় দিন এবং জাহাজের গড় অবস্থান কাল ২.৪৩ দিনে নেমে এসেছে। জেটিতে অবস্থানরত জাহাজসমূহ পর্যবেক্ষণ, নৌযান সমূহের মধ্যে সংঘর্ষ এড়ানো, নিরাপদ পাইলটেজ,নিরাপত্তা নজরদারি সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে ৪৬.১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ইতিমধ্যে ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ হাজার ৭৫ কোটি টাকারও বেশি আয় করেছে। লয়েডস এর সেরা বন্দরের তালিকায় শীর্ষ ১০০ কন্টেইনার হ্যান্ডলিংকারী বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ৬৪ তম,ইতিপূর্বে এটি ছিল ৬৭ তম।

বে টার্মিনাল, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরে টার্মিনাল নির্মাণের পাশাপাশি চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম বন্দর সিঙ্গাপুর বা কলোম্বোর মতো ট্রানজিট পোর্ট হিসেবে সেবা দিতে সক্ষম হবে। সর্বোচ্চ আকারের মাদার ভেসেল ভিড়তে পারবে চট্টগ্রাম বন্দরে। প্রতিবেশী ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাত অঙ্গরাজ্য, ভূটান, নেপাল, চীনের কুনমিং এবং প্রতিবেশি অন্যান্য দেশগুলোকে সার্ভিস দেওয়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে এ বিষয়ে কাজ করছে সরকার। এসব বাস্তবায়িত হলে দেশের অর্থনীতি, জীবন – জীবিকা যেমন উপকৃত হবে তেমনিভাবে বহির্বিশ্বে দেশের সুনামও বৃদ্ধি পাবে।

মোংলা বন্দরকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আধুনিক বন্দরে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে। বর্তমানে বন্দরের নিজস্ব ৬ টি জেটি, ব্যক্তিমালিকানাধীন ১১ টি জেটি, ৩ টি মুরিং এবং ২২ টি এ্যাংকোরেজ এর মাধ্যমে মোট ৪২ টি জাহাজ এক সাথে হ্যান্ডেল করার সক্ষমতা রয়েছে। মোংলা বন্দরে বার্ষিক ১.৫ কোটি মেট্রিক টন কার্গো এবং এক লাখ টিইউজ কন্টেইনার এবং ২০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডলিং এর সক্ষমতা রয়েছে। মোংলা বন্দরের উন্নয়নের জন্য আরও ৬ হাজার ১৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। ২০২৭ সালের মধ্যে এ উন্নয়ন কার্যক্রম শেষ হবে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৪৪০ টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ এ বন্দরে হ্যান্ডলিং করেছে। বন্দরটি ইতিমধ্যে লোকসান কাটিয়ে লাভের ধারায় ফিরেছে। বাংলাদেশে সমুদ্রগামী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দ্রুততার সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাণিজ্যিক চাপ মোকাবিলার জন্য পায়রা বন্দর দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর হিসেবে ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করেছিল। এ বন্দরের আধুনিকায়নে অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। পায়রা বন্দরে এ পর্যন্ত ২৬০ টিরও বেশি জাহাজ এসেছে এবং রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬ শত কোটি টাকারও বেশি।

দেশের তিনটি সমুদ্র বন্দর দিয়ে বছরে কম বেশি ১২ কোটি মেট্রিক টন আমদানি – রপ্তানি পণ্য পরিবহণ হয় সমুদ্রপথে। এ-সব পণ্যের সামান্য অংশই দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহণ করা হয়। বর্তমান অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে অর্থাৎ জুলাই,২২ থেকে নভেম্বর,২২ পর্যন্ত ৫ কোটি ৬৫ লাখ টন পণ্য আমদানি হয়েছে। আর এই আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৫৪৯ কোটি মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে দেশীয় বেসরকারি খাতের কর্ণফুলী লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এইচ আর লাইনস এর দুইটি জাহাজে ৬৬ হাজার ৩৯৬ টি কন্টেইনার পরিবহণ করা হয়েছে। এর বিপরীতে ভাড়া বাবদ আয় হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কন্টেইনার পরিবহণের মাত্র চার শতাংশ দেশীয় জাহাজের মাধ্যমে পরিবহণ করা হয় আর বাকি ৯৬ শতাংশ বিদেশি জাহাজের মাধ্যমে পরিবহণ করা হয়। দেশের সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এখাতে পরিকল্পিতভাবে বিনিয়োগের মাধ্যমে এ ব্যবসায় সুযোগ নিতে পারে। এতে দেশের অর্থনীতি মজবুত হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশের আমদানি – রপ্তানির ৫০ শতাংশ দেশের পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহণ করা গেলে এখাতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে,যা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে এবং দেশে আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যপক পরিবর্তন ঘটাবে।

চট্টগ্রামমুখী আমদানি রপ্তানির পণ্যবাহী মাদার ভেসেলগুলো অনেক সময় আমাদের চট্টগ্রাম বন্দরে না এসে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বা কলোম্বো বন্দরে কন্টেইনারগুলো খালাস করে, তারপর সেগুলো ফিডার জাহাজে করে বাংলাদেশের বন্দরগুলোতে আনা হয়। আবার একইভাবে দেশের বন্দর থেকে পণ্যবাহী কন্টেইনার প্রথমে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বা কলোম্বো বন্দর নেওয়া হয়,সেখান থেকে মাদার ভেসেলে ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়। বাংলাদেশের পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজ আছে মোট ৯০ টি। যার অধিকাংশই বেসরকারি কোম্পানির। এখাতে দক্ষ জনবলের খুব অভাব রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণ করে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যে নানারকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরমধ্যে বরিশাল, রংপুর, পাবনা ও সিলেটে নির্মাণ করা হয়েছে ৪ টি নতুন মেরিন একাডেমি। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দক্ষ জনবলের অভাব অনেকাংশে পূরণ হবে।

বিশ্ব নৌবাণিজ্য অর্থনীতিতে অবদান রাখা এবং নৌশিক্ষার প্রসারে বর্তমান সরকার অত্যান্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে বাস্তবায়ন শুরু করেছে। বর্তমান দেশের বিশাল নৌ অর্থনীতিতে সরকারি বেসরকারি খাতের অংশ যতসামান্য। এই বাণিজ্যে আরও বেশি আবদান রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২০৪১ এর মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে সরকার বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আরও বেশি সক্রিয় করার লক্ষ্যে কাজ করছে ।

এই বিভাগের আরো খবর