জাতীয়

স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অগ্রাধিকারমূলক বাজার প্রবেশাধিকার সম্প্রসারণ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

সময়ের চিত্র ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে তাদের বাণিজ্য-সম্পর্কিত অবকাঠামো সম্প্রসারণ, উৎপাদন সক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে এবং অগ্রাধিকারমূলক বাজার প্রবেশাধিকারকে কাজে লাগাতে হবে। বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক হওয়ার ওপর অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, “এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর কানেকটিভিটি, মানব মূলধন, বাণিজ্য অর্থায়ন এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরে সহায়তা এবং বিনিয়োগ প্রয়োজন।”

মঙ্গলবার কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলনে “আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক একীভূতকরণে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি” শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের বিষয়ভিত্তিক গোল টেবিলের প্রধানমন্ত্রী সহ-সভাপতিত্ব করছিলেনকালে এ কথা বলেন।

ডব্লিউটিওতে এলডিসি গ্রুপ ইতিমধ্যেই এই বিষয়গুলোর ওপর তাদের প্রস্তাব দিয়েছে উল্লেখ করে, তিনি বলেন, “বিশেষত কোভিড-১৯ মহামারী এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ দ্বারা সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের কারণে এই প্রস্তাবগুলোকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা স্পষ্ট যে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা এবং দোহা কর্মসূচিতে নিজেদের জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জনে নিজেদের প্রচেষ্টাকে পুনরায়-দ্বিগুণ করতে হবে। এজন্য জাতীয়, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রতিশ্রুতিগুলো প্রাজ্ঞ, বাস্তবসম্মত এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উৎপাদনশীল ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভালভাবে পরিকল্পিত হওয়া উচিত। আমি আশা করি, দোহা কর্মসূচিতে আমরা নিজেদের জন্য যে লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করেছি, তা অর্জনে আমাদের আলোচনা ইতিবাচকভাবে অবদান রাখবে ৷’

বাংলাদেশের ওপর আলোকপাত করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার একটি বহুমুখী (মাল্টিমোডাল) পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তঃসীমান্ত সংযোগ উন্নত করার ওপর বিশেষভাবে জোর দিয়েছে। ‘এটি খরচ কমাবে, দক্ষতা বাড়াবে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে উন্নয়ন ঘটাবে।’

তিনি বলেন, তাঁরা দক্ষতা উন্নয়ন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, মেধা সম্পদের উন্নয়ন এবং এর প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের নীতি হচ্ছে জাতীয় উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করা। “হাতে হাত রেখে কাজ করে, আমরা এখন আমাদের দেশকে এলডিসি উত্তরণের বর্তমান পর্যায়ে নিয়ে এসেছি এবং আমাদের স্বল্প মেয়াদী অগ্রাধিকার হচ্ছে মসৃণ এবং টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করা।”

উচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠকের আরেকজন সহ-সভাপতি ছিলেন বুরুন্ডি প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট এভারিস্ট এনদাইশিমিয়ে।

অন্যান্যদের মধ্যে এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ এবং বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীগণ এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং অন্যান্য স্বীকৃত আন্তঃসরকারি সংস্থার পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

এদিকে এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলডিসি ৫ জাতিসংঘ সম্মেলনের সাইডলাইনে এক অনুষ্ঠানে উন্নয়ন সহযোগীদের সামনে পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের উন্নয়ন অংশীদারদের জন্য পাঁচটি পরামর্শ তুলে ধরতে চাই। প্রথমত বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য কমপক্ষে ছয় বছরের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাজারে প্রবেশাধিকার সম্প্রসারণ; বাণিজ্যের জন্য সহায়তাসহ তাদের বাণিজ্য সুবিধা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) আয়োজিত ‘গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর স্মুথ অ্যান্ড সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন: মার্চিং টুওয়ার্ডস স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে তিনি এসব সুপারিশ তুলে ধরেন।

এছাড়াও এদিন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ এমএইচ স্কুলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির ভাষণে বলেন প্রবাসী বাংলাদেশীদের তারা যে দেশের জন্য কাজ করেন, সেসব দেশের আইন কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে । আইনভঙ্গ করে কেউ কোন অপরাধে যুক্ত হলে বাংলাদেশ তাদের বাঁচাতে ন্যূনতম প্রচেষ্টাও চালাবে না বলে সতর্কবার্তাও উচ্চারণ করেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button