সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের বাসভবনে ভাঙচুর-লুটপাট
জনতার উল্লাস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সরকারবিরোধী বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে দুই দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন ঘটেছে। তার পতনের পরপরই দেশজুড়ে উল্লাসে মেতে উঠেছেন লাখ লাখ সিরীয় নাগরিক। তাদের মধ্যে অনেকে দামেস্কের কেন্দ্রে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আসাদের বিলাসবহুল বাসভবনে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় এবং মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। খবর রয়টার্স, এএফপি।
স্থানীয় সময় রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিদ্রোহীদের রাজধানী দামেস্ক দখলের মধ্য দিয়ে আসাদের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির একজন প্রতিনিধি বলেছেন, রোববার বিদ্রোহীদের হাতে দামেস্কের পতনের পরপরই প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিলাসবহুল বাড়িতে লুটপাট করেছেন কয়েক ডজন সিরীয়। এ সময় বিভিন্ন বয়সী নারী, শিশু এবং পুরুষদের আসাদের বাড়ি ও বিশাল বাগানে ঘুরতে দেখা যায়।
প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কক্ষগুলো একেবারে খালি থাকলেও কিছু আসবাবপত্র মেঝেতে পড়ে রয়েছে। এছাড়া প্রাসাদে সংরক্ষিত আসাদ ও তার বাবার বেশ কিছু প্রতিকৃতি ভেঙে ফেলেছেন তারা।
দামেস্কের বাসিন্দা ৪৪ বছর বয়সী আবু ওমর বলেন, আমি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এখানে এসেছি। তারা অবিশ্বাস্য উপায়ে আমাদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে।
নিজের মোবাইল ফোনে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে তোলা ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, আমি এখানে এসে ছবি তুলছি। কারণ আসাদের বাড়ির মাঝখানে আসতে পেরে অত্যন্ত খুশি।
স্বৈরশাসক আসাদের পতনের জেরে রোববার খুশিতে রাস্তায় নেমে আসে সিরীয়রা। সেনাবাহিনীর ট্যাংকের ওপর উঠে উল্লাস করেন অনেকে।বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সঙ্গে উল্লাসে মাতে সাধারণ মানুষ। সিরিয়ার হোমসে অস্ত্র উঁচিয়ে আনন্দ–উল্লাস করে বিদ্রোহীরা। আসাদের বিদায়ঘণ্টা বাজার পর শনিবার মধ্যরাতেও জনতা উল্লাসে আতশবাজি করেছে।
রোববার সিরীয় নাগরিকদের ঘুম ভেঙেছে পরিবর্তিত এক পরিস্থিতিতে। ঘুম থেকে উঠেই সিরিয়ার নাগরিকরা নতুন এক দেশ দেখতে পান। যেখানে মাত্র ১১ দিনের এক বিদ্রোহী অভিযানে ক্ষমতার মসনদ উল্টে গেছে বাশার আল-আসাদের। এ দিন সকালের দিকেই ব্যক্তিগত বিমানে করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন তিনি। তবে তার গন্তব্য এখন পর্যন্ত অজানাই রয়েছে।
সিরিয়ার একাধিক নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ তাকে বহনকারী বিমানটি উড্ডয়নের পরপরই উপকূলীয় এলাকায় পৌঁছানোর আকস্মিকভাবে ইউটার্ন নেয়। এর কয়েক মিনিট পর বিমানটি সিরিয়ার আকাশ থেকে উধাও হয়ে যায়।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের বাসভবনটি দামেস্কের আল-মালিকি অভিজাত এলাকায় অবস্থিত। সেখানে তিনটি ছয় তলা ভবন নিয়ে গঠিত তার বাসভবন। এএফপির একজন সংবাদদাতাও কয়েক কিলোমিটার দূরে দামেস্কের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে পুড়ে যাওয়া একটি অভ্যর্থনা হল দেখেছেন।
পতনের আগ পর্যন্ত আসাদের বাসভবন এবং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের প্রবেশ সীমিত ছিল।