সময়ের চিত্র ডেস্ক:
ভারতের ১৮ তম লোকসভা নির্বাচনে সপ্তম দফার ভোটগ্রহণ পর্ব আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। শেষ দফায় শনিবার দেশটির ৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের ৫৭টি লোকসভা আসনে ভোট নেয়া হয়। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ৯টি লোকসভা আসনে ভোট হয়েছে। তবে আগামী ৪ জুন ফলাফল ঘোষণা করবে ভারতের নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এর মধ্যে একাধিক জায়গায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১ জুন) সকাল ৭টায় পশ্চিমবঙ্গে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে। এ দফায় রাজ্যের নয় আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। সেগুলো হলো- দমদম, বারাসাত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, যাদবপুর, কলকাতা দক্ষিণ ও কলকাতার উত্তর কেন্দ্র। কিন্তু ভোট শুরুর পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গা থেকে সহিংসতার খবর আসে।
পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন দলের তরফ থেকে নির্বাচন চলাকালীন প্রায় তিন হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে। যার বেশিরভাগ তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। যদিও নির্বাচন কমিশনের দাবি রাজ্যে ভোট শান্তিপূর্ণ।
এ দফায় ভারতজুড়ে ৯০৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হয়। উত্তরপ্রদেশের বারাণসী কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিজেপির শীর্ষ নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই কেন্দ্রে তার প্রধান প্রতিপক্ষ ছিলেন কংগ্রেসের অজয় রাই।
এছাড়াও নির্বাচনের লড়াইয়ে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজেপি প্রার্থী অনুরাগ ঠাকুর (হামিরপুর), রবি শংকর প্রসাদ (পাটনা সাহিব), বিজেপি প্রার্থী ভোজপুরি অভিনেতা রবি কিষান (গোরখপুর), বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালপ্রসাদ যাদবের কন্যা আরজেডি প্রার্থী মিসা ভারতী (পাটলিপুত্র), সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা (কাংড়া), বিজেপি প্রার্থী অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত (মান্ডি), তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও মমতা ব্যানার্জির ভাতিজা অভিষেক ব্যানার্জি (ডায়মন্ড হারবার), টলিউড অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ (যাদবপুর), বিজেপির রেখা পাত্র (সন্দেশখালি), শিরোমণি আকালি দলের প্রার্থী হরসিমরাত কৌর বাদল (ভাতিণ্ডা)।
শেষ দফায় দেশজুড়ে সমাজের বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত, বিজেপির সভাপতি জেপি নাড্ডা, বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব ও রাবড়ি দেবী, আম আদমি পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ রাঘব চাড্ডা, সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার হরভজন সিং প্রমুখ।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গেও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভোটের লাইনে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন বিজেপি নেতা ও বলিউড স্টার মিঠুন চক্রবর্তী। কলকাতার বেলগাছিয়ায় ভেটেরিনারি কলেজে ভোট দেন মিঠুন। দক্ষিণ কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনে ভোট দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানার্জি, মমতার ভাতিজা তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি অভিষেক ব্যানার্জি, দক্ষিণ কলকাতা সাউথ সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ভোট দেন অভিনেতা দীপক অধিকারী (দেব)। চেতলার একটি স্কুলে ভোট দেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ঠাকুরপুকুর জনকল্যাণে ভোট দেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মার্চ লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছিল ভারতের নির্বাচন কমিশন। প্রথম দফার নির্বাচন হয় ১৯ এপ্রিল। সেই থেকে ১ জুন- মোট সাত দফায় ভারতের ৫৪৩ লোকসভার আসনে ভোট নেওয়া হলো।
আগামী ৪ জুন ভোট গণনা শুরু হবে। সেক্ষেত্রে স্বাধীনতার পর এই নিয়ে দ্বিতীয় বার দীর্ঘদিন ধরে (৪৪ দিন) চলল এই ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া। ১৯৫১-৫২ সালে ভারতে প্রথম লোকসভা নির্বাচন প্রক্রিয়া চলে প্রায় চার মাস ধরে। ১৯৮০ সালে সবচেয়ে কম সময়ে ভোট প্রক্রিয়া শেষ হয়। মাত্র ৪ দিন ধরে চলে ওই ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া।