নিজস্ব প্রতিবেদক:
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টার কথায় খটকা লাগে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমি একটু চিন্তিত হয়ে যাই, উদ্বিগ্ন হই। উপদেষ্টারা কখন কী বলেন ওই খানেই আমাদের খটকা লাগে। আমি আশা কবর যে, আপনি সরকারে আছেন, দায়িত্ব পালন করছেন। এমন কোনো কথা বলবেন না বা এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে জনগণ বিভ্রান্ত হয়।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকালে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) ৫২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, সম্ভবত লোকাল গর্ভামেন্টে এডভাইজার সাহেব (হাসান আরিফ) বলেছেন, ‘চার বছর সরকারের মেয়াদ।’ এটা তার বলার কথা নয়। তারা কমিশন গঠন করেছেন সেই কমিশন প্রস্তাব দেবেন, জনগণ এক্সসেপ্ট করবে তারপরে না জনগণ ঠিক হবে। কিন্তু যিনি ক্ষমতায় বসে আছেন তিনি যদি বলেন যে, সরকারের মেয়াদ চার বছর হবে তাহলে একটা চাপ পড়ে যায়।
দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, আমরা আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই। এটা আমরা পরিস্কার করেছি। কেনো দ্রুত নির্বাচন চাই? দ্রুত চাই এ জন্য যে, নির্বাচিত সরকার ছাড়া জনগণকে আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। প্রথমত আমরা মনে করি সংস্কার করতে হবে, তা পার্লামেন্টে সেইভাবে অনুমোদন করা হবে। ডিবেট করে সেখানে সেটা পাস করাতে হবে এবং তাদের জনপ্রতিনিধিকে গ্রহণ করিয়ে সেটা করতে হবে। সুতরাং নির্বাচন যত তাড়াতাড়ি হবে তত দেশের জন্য মঙ্গল। দ্বিতীয়ত শত্রুরা চেষ্টা করছে আমাদের সমস্ত কিছু দখল করার, বিপ্লবকে ব্যর্থতায় পরিণত করতে তারা সুযোগ পেয়ে যায় এবং পাচ্ছে।
বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি এটা বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমাদের বাংলাদেশের মানুষ আমরা অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি। আমরা সব সময় সকল সম্প্রদায় একসাথে কাজ করে আসছি, একসাথে যুদ্ধ করেছি। ইদানিং দেখছি একটা সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে বড় রকমের আন্দোলন সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। ভারতের যে বক্তব্য বাংলাদেশের বিপদ সম্পর্কে তার সঙ্গে মিলে যায়। যেটা বাংলাদেশের এই বিপ্লব ছাত্র-জনতার রক্ত দিয়ে যে অর্জন করা সেটাকে অনেকাংশে বিপন্ন করার চেষ্টা করছে। এই কথা বলতে আমি বাধ্য হলাম। আমাকে বিদেশের সাংবাদিকরা টেলিফোন করেন। বিশেষ করে ভারতের সাংবাদিকরা। তারা বলতে চান যে, স্যার ড. ইউনুস কি রাষ্ট্র্র চালাতে পারছেন না। এই ধরনের কথা বার্তা তাদের কাছ থেকে আসে।
‘আমি তাদেরকে বলি প্রশ্নই উঠতে পারে না। গোটা দেশের মানুষ তার উপর আস্থাশীল। তিনি সুন্দরভাকে দেশ চালাচ্ছেন। যাকে মানুষ সমর্থন দেয় সেখানে কোনো কিছু থাকতে পারে না’ বলেন বিএনপি মহাসচিব।
জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির তানিয়া রব, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।