
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচি করতে শরীক জোটগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি।আজ বুধবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সমমনা রাজনৈতিক দল ও ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং লেবার পার্টির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক হয়।
এই তিনটি বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে স্কাইপে যুক্ত হয়ে নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।
সমমনা জোট নেতারা জানান, চলমান আন্দোলনের মূল নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে তাদের এটি প্রথম বৈঠক। এ বৈঠকে সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শরীকদের মতামত নেওয়ার পাশাপাশি বিএনপির হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। তারা মনে করেন, চলমান আন্দোলনে এর ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
জোট নেতারা আরও বলেন, এই বৈঠকে তারা সবাই একমত হয়েছেন, চলমান আন্দোলনে সফল না হলে দেশের মানুষ দীর্ঘদিনের জন্য ভোটাধিকার হারাবে এবং দেশ দীর্ঘদিনের জন্য অন্ধকার গহ্বরে চলে যাবে। দেশ ও জনগণের স্বার্থে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থেকে চূড়ান্ত আন্দোলনে সবাইকে ভূমিকা রাখতে বিএনপির পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়। তারা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ি চূড়ান্ত আন্দোলনে ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
বিকেল ৪টা থেকে রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত পৃথকভাবে এসব বৈঠক হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।
১২ দলীয় জোটের বৈঠকে ছিলেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএলডিপি শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মনসুর হাসান রায়পুরী, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাপপা (তাসমিয়া প্রধান) রাশেদ প্রধান, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির (একাংশ) ফারুক রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল করিম ও ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের বৈঠকে ছিলেন এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপা (লুতফুর রহমান) খন্দকার লুতফুর রহমান, এসএম শাহাদাত, গণদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, আবু সৈয়দ, বিকল্পধারার নুরুল আমিন বেপারী, শাহ আহমেদ বাদল, ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী, আবদুল বারিক, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম, মাইনোরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মন্ডল, দিলীপ কুমার দাস, মুসলিম লীগের নাসিম খান, এনডিপির আবু তাহের, আবদুল্লাহ আল হারুন সোহেল, ডেমোক্রেটিক লীগের আকবর হোসেন।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির বৈঠকে ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এসএম ইউসুফ আলী, আমিনুল ইসলাম, হিন্দুরত্ন রাম কৃষ্ণ সাহা ও জহুরা খাতুন জুই।
এছাড়া বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার যুগপতের বাকি শরিকদের সঙ্গেও বিএনপি বৈঠক করবে।
গত ১২ জুলাই থেকে একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। আগামী ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের ঘোষিত কর্মসূচি রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে ছাত্র কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে আগামী ১৪ অক্টোবর ঢাকাসহ দেশের সকল জেলা ও মহানগরে প্রতীকী গণঅনশন, এক দফা দাবিতে ১৬ অক্টোবর ঢাকায় যুবসমাবেশ ও ১৮ অক্টোবর ঢাকায় জনসমাবেশ করবে বিএনপি।
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে সরকারের পতনের রূপরেখা ঘোষণা করে বিএনপি তার সমমনা জোট গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তবাদী সমমনা জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, এলডিপি, লেবার পার্টি, এনডিএম বেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।’