জাতীয়

সংস্কৃতির সঙ্গে ধর্মের কোনো বিরোধ নেই –সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, সংস্কৃতি ও ধর্ম স্বতন্ত্র বিষয়, একটির সঙ্গে অন্যটির কোনো বিরোধ নেই। আমরা প্রকৃতি থেকে সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান সংগ্রহ করি, শিক্ষা নিই। অন্যদিকে, সৃষ্টিকর্তা প্রেরিত পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে আমরা ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করে থাকি। একটির সঙ্গে অন্যটির কোনো দ্বন্দ্ব নেই।

প্রতিমন্ত্রী আজ শুক্রবার রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দশ দিনব্যাপী (১১-২০ এপ্রিল) ‘বৈশাখী মেলা ১৪৩০’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, বৈশাখী মেলা বাংলা নববর্ষের সর্বজনীন অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম। নতুন বছরে মানুষের আনন্দ অনুভূতির প্রকাশ ঘটে বৈশাখী মেলার মাধ্যমে। এ মেলা উপলক্ষ্যে মানুষের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, নানা জাতের কুটির শিল্প, কারুশিল্প, খেলনাসহ হরেক রকমের পণ্যের সমাহার ঘটে এ মেলায়। এছাড়াও থাকে যাত্রা, পুতুলনাচ, নাগরদোলা, সার্কাসসহ বিনোদনমূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন। নতুনকে বরণ করার উদ্দেশ্যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণে বৈশাখী মেলা একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়। এতে মানুষের প্রগতিশীল চেতনা জাগ্রত হয়।

পহেলা বৈশাখকে প্রতিহত করার জন্য কিছু ধর্মান্ধ গোষ্ঠী নানাভাবে অপচেষ্টা চালিয়ে বর্তমান সরকারের তৎপরতার কারণে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন পহেলা বৈশাখের দু’টি প্রেক্ষাপট অর্থাৎ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক তাৎপর্য তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। সম্রাট আকবরের সময় কৃষি জমির খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে বাংলা নববর্ষ চালু হয়। ধীরে ধীরে এটি সর্বজনীন রূপ লাভ করে। কে এম খালিদ বলেন, বিভিন্ন সময়ে কিছু ধর্মান্ধ ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী পহেলা বৈশাখের বিরোধিতা করেছিল। পাকিস্তান সরকারের আমলে একবার পহেলা বৈশাখ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, সেই পাকিস্তানের প্রেতাত্মা একটি গোষ্ঠী আবারও পহেলা বৈশাখের পেছনে উঠেপড়ে লেগেছে। পহেলা বৈশাখের অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা যেটি ইতোমধ্যে ইউনেস্কো’র বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে, সেটিকে নিষিদ্ধকরণের জন্য একজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো বক্তব্য রাখেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন বিসিকের চেয়ারম্যান মুহঃ মাহবুবুর রহমান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button