দেশ

 শ্রীমঙ্গলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারদের কর্মবিরতি 

শীবু শীল, মৌলভীবাজার:
“ক্যাডার বৈষম্য নিরসন চাই” এই স্লোগানে সারাদেশের ন্যায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সকল ন্যায্য দাবি আদায়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির একদিনের সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে এই সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করা হয়।
এসময় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডাররা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য নিরসন, সুপার নিউমারারি পদে পদোন্নতি, অধ্যাপক পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীতকরণ, অর্জিত ছুটি প্রদান এবং ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি বাতিল, শিক্ষা ক্যাডার তফসিলভুক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন ন্যায্য দাবী তুলে ধরেন।
কর্মবিরতি পালনকালে বক্তারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার যেসকল অভীষ্ট নির্ধারণ করেছে সেগুলো অর্জনে তিনিও শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে তাই তিনি স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। এগুলো বাস্তবায়নে প্রয়োজন জাতির পিতার দর্শনের বাস্তবায়ন। যিনি শিক্ষা প্রশাসন পরিচালনায় শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব প্রদানের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন, একই ব্যবস্থা গ্রহণ বর্তমান বাস্তবতায় সবচাইতে প্রাসঙ্গিক। তাই জরুরিভাবে প্রয়োজন একটি দক্ষ, যুগোপযোগী ও স্বয়ংসম্পূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থাপনা। শিক্ষায় জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে উপজেলা, জেলা, অঞ্চলে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট দপ্তর, অধিদপ্তর ও প্রকল্পসমূহ পরিচালনায় শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগ সময়ের দাবি।’
বক্তারা আরো বলেন, ‘শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার কর্মকর্তা বর্তমান সরকারের ভিশন-২০৪১ তথা স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন কিন্তু প্রাপ্য অধিকার ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কোন কারণ ছাড়াই পদোন্নতি বন্ধ। আছে দুই বছর। এই মূহুর্তে শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা ৭ হাজারের বেশি। এর মধ্যে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য ১২শ জন। সহযোগী অধ্যাপক পদে ক্ষতি যোগ্য ৩ হাজার জন, সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য কর্মকর্তা আছেন প্রায় ৩ হাজার জন। এই কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য সরকারের কোন অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন নেই। সবাই পদোন্নতিযোগ্য পদের বেতন স্কেলের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গেছেন। ক্যাডার সার্ভিসে শূন্য পদ না থাকলে পদোন্নতি দেয়া যাবে না এমন কোন বিধান নেই। অথচ, শিক্ষা ক্যাডারকে শূন্য পদের অজুহাতে পদোন্নতি বঞ্চিত রাখা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল ক্যাডারের জন্য সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দিয়ে ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশনা দিলেও তা পালিত হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আন্তর ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশ দিয়েছেন বারবার। কিন্তু সে নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।’
বক্তারা বলেন, ‘অন্য ক্যাডারের মত শিক্ষা ক্যাডারে ব্যাচভিত্তিক পদ্যেন্নতি অনুসৃত না হওয়ায় অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণ পিছিয়ে আছেন। বেতন স্কেল অনুযায়ী ৪র্থ ও ৬ষ্ঠ গ্রেড প্রাপ্য কর্মকর্তাগণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে ১ বছর পূর্বে। কিছু এ বিষয়েও কোনো অগ্রগতি নেই। শিক্ষা ক্যাডারের উল্লিখিত দাবিগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই অনেক পুরাতন। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের দাবিগুলো পূরণ হয়নি। একারণে দাবী আদায়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর রফি আহমদ চৌধুরী। এসময় বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুদর্শন শীল, বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. সাইফুল ইসলাম, ব্যাপস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মো. দেলোয়ার হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক বিজন চন্দ্র দেবনাথ প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button