জাতীয়

শান্তি, ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতার জন্য সকলকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

সময়ের চিত্র রিপোর্ট:

প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সকল হুমকি, উসকানি ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। আমি বিপজ্জনক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সম্পদ অপচয় না করে বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের জন্য পণ্য ও পরিষেবা প্রদানে অর্থ সংস্থান করার জন্য আহ্বান জানাই। বিশ্বজুড়ে শান্তি, ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতার জন্য সকলকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানাই।

দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সম্পর্কে অবহিত করতে আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণের দেশসমূহের উপর আরোপিত সিদ্ধান্ত, বিভাজনের নীতিকে না বলার এখনই সময়। সর্বজনীন নিয়ম ও মূল্যবোধকে অস্ত্রে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আমাদের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে।

তিনি বলেন, স্যাংশন ও কাউন্টার স্যাংশনের এ যুগে এ সফরের মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণসহ বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে গেছে।

প্রধান মন্ত্রী বলেন, ব্রিকস সম্মেলনে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলি। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ে তুলে ধরা হয়। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলো কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা ব্রিকস সম্মেলনে বাংলাদেশ তুলে ধরেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারে সেটাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে জনগণ ভালো পরিবেশে ভোট দিয়েছে, আগামীতে ভালোভাবে ভোট দিতে পারবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে, এটাই বিশ্বাস করি।

বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এই দলটি ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি করে কিছু টাকা যাবে গুলশানে, কিছু যাবে হাওয়া ভবনে, বাকিটা যাবে লন্ডনে। নিজেরা নিজেরা মারামারি করবে, দুর্নীতি করতে করতে এক সময় তারা বলবে আমরা পারবো না। সেই দলকে জনগণ ভোট দেবে?
ড. ইউনূসের বিচার প্রসঙ্গে করা সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান মন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূসের অপরাধ ও মামলার বিষয় খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞ পাঠানোর আহ্বান বিশ্বনেতাদের প্রতি আহবান জানাই। ড. ইউনূসের ব্যাপারে বিবৃতি না দিয়ে এক্সপার্ট পাঠান। আমাদের এখানে ল এন্ড অর্ডার আছে। আমাদের দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। তবে কেউ যদি শ্রমিকের টাকা না দেয়, আর মামলা হয় আমাদের কি করার আছে। জুডিশিয়ারি তো স্বাধীন। এই মামলা যাতে না হয় তার জন্য ঘুষ দেয়া হয়।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এটা কোনো কথা নয়। কে কত বড় শক্তিশালী আমি দেখবো। সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এমন কিছু বাণিজ্যমন্ত্রী বললে তাকে আমি ধরবো।

গত রোববার প্রধানমন্ত্রী ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ থেকে দেশে ফিরেছেন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ২২ থেকে ২৪ আগস্ট জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তৃতা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

২৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। ব্রিকসের বর্তমান চেয়ারম্যান দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট আয়োজিত ‘রাষ্ট্রীয় ভোজে’ যোগ দেন শেখ হাসিনা। পরদিন ‘ব্রিকস-ফ্রেন্ডস অব ব্রিকস লিডার্স ডায়ালগে’ নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব ব্রিকসের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তৃতা দেন শেখ হাসিনা।

সম্মেলনের ফাঁকে স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে শেখ হাসিনার সঙ্গে কয়েকটি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান বৈঠক করেন। পাশাপাশি জোহানেসবার্গে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

এবারের সম্মেলনে আর্জেন্টিনা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ব্রিকস জোটের পূর্ণ সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই দেশগুলোর সদস্যপদ ২০২৪ এর জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। নতুন ছয় দেশ নিয়ে ব্রিকসের সদস্য দেশ হতে যাচ্ছে ১১টি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button