নিজস্ব প্রতিবেদক:
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত মন্তব্যের কারণে মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অপসারণ করতে চাপ বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিজে থেকে পদত্যাগ করবেন, নাকি অন্তর্বর্তী সরকার তাকে অপসারণ করবে, এটাই এখন মূল আলোচনা। পদত্যাগ না করলে কীভাবে অপসারণ করা হবে, এটা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
অবশেষে এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। বুধবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
সেখানে তিনি জানান, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা বলতে পারি, এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অন্য কোনো বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হলে আপনারা জানতে পারবেন।
এই পদত্যাগের দাবিকে সরকার কীভাবে দেখছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক ধরনের দাবি অনেক জায়গায় তৈরি হয়। সবগুলো তো আমরা এড্রেস করি না।
সম্প্রতি মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জানান, তার কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই।
রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্যের পর তাকে অপসারণ করতে আন্দোলনে নেমেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন মহল। রাষ্ট্রপতিকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ বলে তার পদত্যাগের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে ভিন্ন ভিন্ন ব্যানারে বঙ্গভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেন কয়েক শ বিক্ষোভকারী। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাদের একটি অংশ বঙ্গভবনের সামনের ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাত পৌনে ২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা বঙ্গভবন এলাকা ছেড়ে যান।
মঙ্গলবার দিন-রাত আন্দোলনের পর আজ বুধবারও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের সামনে।
সকাল থেকে ছাত্র-জনতার উপস্থিতি দেখা না গেলেও কড়াকড়ি রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি। সেনাবাহিনী ও বিজিবির পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে র্যাব ও এপিবিএন সদস্যরাও। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে বঙ্গভবনের সামনের রাস্তায় বসানো হয়েছে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী। চার স্তরের বেষ্টনীর পাশাপাশি রাখা হয়েছে তিন স্তরের কাঁটাতারের বেড়াও।