সময়ের চিত্র ডেস্ক: দেশের ইতিহাসে বড় ট্র্যাজেডি সাভারের রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর পূর্ণ হলো আজ ২৪ এপ্রিল। কিন্তু এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচারকাজ চলছে ধীরগতিতে। মামলার ৫৯৪ সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৮৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এত দিনেও বিচার শেষ না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা ভবন। ওই ঘটনায় এক হাজার ১৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। জীবিত উদ্ধার করা হয় দুই হাজার ৪৩৮ জনকে। শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয় এই শিল্প দুর্ঘটনা।
এ ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হয়। বর্তমানে শ্রমিক মৃত্যুর এই মামলাটি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। অপরদিকে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা আইনে দায়ের করা মামলাটিও হাইকোর্টে স্থগিত হয়ে আছে। ফলে, আইনি জটিলতার কারণে এগুচ্ছে না এই মামলার কার্যক্রম।
শ্রমিক মৃত্যুর হত্যা মামলাটি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করে আসামিপক্ষ। হাইকোর্টে পাঁচ বছর মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকে। পরে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর গত বছরের ৩১ জানুয়ারি মামলার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। গত এক বছর তিন মাসে এ মামলায় অভিযোগপত্রের ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
মামলাটি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিমল সমদ্দার জানান, মামলাটিতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে। এরপর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিলে আসামিরা সেই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যান। শুরু থেকে মামলাটি বিভিন্নভাবে সময় নষ্ট হয়েছে। অন্যান্য আইনগত বাধা পেরিয়ে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে এসেছে। কিন্তু সাক্ষীরা ঠিকমতো হাজির না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা আদালত থেকে সাক্ষীদের বার বার সমন পাঠানোর পরেও তারা হাজির না হওয়ায় শেষমেষ অনেক সাক্ষীকে পুলিশ ধরে এনেছে।
তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ৫৯৪ জন সাক্ষীকে মধ্যে প্রায় ৮৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেছি। আরও ১০০ জনের মত সাক্ষ্য নেয়া লাগতে পারে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ করে চেষ্টা যাচ্ছি। আশা করছি, খুব শিগগিরই মামলাটির বিচার শেষ হবে এবং ভিকটিমদের পরিবার ন্যায় বিচার পাবেন।