
মোঃ নাজমুল হোসেন বিজয়, বরগুনা : রহস্যজনক আগুন’ আতঙ্কে বরগুনার এক গ্রামের মানুষ। আগুনে পুড়ে যাওয়ার ভয়ে বাড়ীর লোকজনের ব্যবহার্য কাপড় চোপড় ও মালামাল অন্যর বাড়িতে রেখে এসেছেন।
ভুক্তভোগী হারুন প্যাদা জানান, অলৌকিক কোনও কারণে তার বাড়ীতে ৬ দিনে ১৭ বার আগুন ধরছে বাড়ির বিভিন্ন স্থানে। কখনও রান্নাঘরে, কখনওবা কাপড়ের ট্রাংকের ভেতর, কখনও ঘরের চালাতে।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ২ বার আগুন লেগেছে পাকের ঘরে ও গরুর খড়ে। প্রথম দিন শনিবার ভোরবেলা ও সকালে ঢাকনা দিয়ে রাখা প্লাস্টিকের ড্রামের ভেতর দুবার, দুপুরে গোয়াল ঘরে একবার আগুন লাগে। এরপর ঘরের বিভিন্ন স্থানে ১৭ বার আগুন লেঘেছে।
ভুক্তভোগী হারুন প্যাদার ছেলে শাহিন প্যাদা বলেন, ‘আমরা এখন বিশ্বাস করে নিয়েছি এটা অলৌকিক আগুন। লেপ তোষকে আগুন লেগে পুড়ে যায়।’
হারুন প্যাদার বাড়ির উঠানে ফেলা রয়েছে আগুনে পোড়া তোষক। কিন্তু কী ভাবে এ সব ঘটল? হারুন প্যাদার স্ত্রী খালেদা বেগম বলেন, বলেন পরিবার নিয়ে সবাই খুব আতঙ্কে আছি। ৬দিন হল হঠাৎ করেই বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় ঘরের বিছানায়,পর্দায়, গোয়ালঘরে আগুন ধরে যাচ্ছে।’’
খালেদা বেগম বলছেন, ‘‘এমন ঘটনা কখনও দিনের বেলা ঘটছে, কিন্তু কী ভাবে আগুন ধরছে সেটা আমারা কেউই কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। দরজা বন্ধ করে দিয়ে সবাই বাইরে বেরিয়ে যাবার পরেও ঘরের বিছানায় আগুন কী ভাবে ধরে যাচ্ছে সেটাই আমাদের আশ্চর্যজনক লাগছে। বাড়িতে বাচ্চা রয়েছে। ইলেকট্রিক মিস্ত্রীকে দিয়ে গোটা বাড়ির ইলেকট্রিক লাইন পরীক্ষা করানো হয়েছে। লাইনে কোনও সমস্যা নেই। তবুও হঠাৎ হঠাৎ ঘরে আগুন লেগে যাচ্ছে।’’
প্রতিবেশী ঈসমাইল চৌকিদার বলেন, “এমন ঘটনা সিনেমায় দেখেছি। গোয়েন্দা ও ভূতের গল্পের বইয়ে পড়েছি। আর এখন সেই সব বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি।”
প্রতিবেশি বাবুল মিয়া.মিলন মিয়াও মো. রুবেল বলেন, আমরা শুনেছি হারুন প্যাদার মেয়ে সুমা স্বপ্নে দেখেছেন সে গুপ্তধন পাবে এ জন্য তাকে একটি ভোগ দিতে হবে। সুমা আক্তার এঘটনা তার পিতা মাতাকে জানালেও সুমার পিতা হারুন ও মা খালেদা বেগম ভোগ দেয়নি। স্বপ্নে যেদিন ভোগ দিতে বলেছে সেদিন ভোগ না দেওয়ায় তার পরের দিন থেকে আগুন লাগতেছে এ কথা তারা হারুন প্যাদার বাড়ীর লোকজনেদের কাছ থেকে শুনেছে। আর আগুন লাগা প্রথমে দেখতে পায় হারুনের মেয়ে সুমা তারপর বাড়ীর অন্যলোকজন দেখে। বর্তমানে হারুন প্যাদার বাড়ীতে প্রতিদিন শতশত লোক ভিড় করছে। আতংকের মধ্যে রয়েছে প্রতিবেশিরা।
এব্যাপারে কুকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. বোরহান উদ্দিন আহমেদ মাসুম তালুকদার বলেন, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখতেছি।
আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।