রাজনীতি

যা বলল জাপাসহ পাঁচ দল মার্কিন প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের

বিশেষ প্রতিনিধি:

নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে সেই নির্বাচন সুষ্ঠু বা পক্ষপাতদুষ্ট, এর কোনোটাই বোঝা যায় না। প্রধান দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কোনো একটি নির্বাচনে অংশ না নিলে সে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠকে এই মত জানিয়েছে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)।

অন্যদিকে নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন ও আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) বলেছে, তাদের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, কোনো দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। শুধু নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা গেলে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। দলগুলো বলেছে, তারা দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনে যাবে না।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠক করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। এর পর সন্ধ্যায় নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন ও এবি পার্টির প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র সরকার নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না, তা যাচাই করতে প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে আইআরআই ও এনডিআই যৌথভাবে প্রাক্‌-নির্বাচন সমীক্ষা মিশন (পিইএএম) পরিচালনা করছে।

বৈঠকের একটি সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলটি জাপার প্রতিনিধিদলের কাছে জানতে চেয়েছে, তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে কি না। জবাবে দলটির নেতারা বলেছেন, নির্বাচনে অংশ নেবেন না, তাঁরা এমন কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেননি। তাঁরা পরিস্থিতি দেখছেন। এ প্রসঙ্গে ২০১৪ সালে এরশাদের নির্বাচন বর্জনের অভিজ্ঞতা সুখকর হয়নি বলে জানানো হয়।

ওই সূত্র জানায়, নির্বাচনে কোন কোন ক্ষেত্রে অনিয়ম হয় এবং তা কীভাবে রোধ করা যায়, নির্বাচনের বিষয়ে সংবিধানের ফাঁকফোকর, নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের শর্তসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা।

বৈঠক শেষে জাপার চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়ে তাঁরা জানতে চেয়েছেন। বিএনপি বলেছে, তারা এই সরকারের অধীন নির্বাচন করবে না, তারা আন্দোলন করবে। সেখানে সহিংসতা হতে পারে। ফলে নির্বাচন নিয়ে এখনো অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা আছে।

জি এম কাদেরের নেতৃত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল, উপদেষ্টা মাসরুর মওলা এবং ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান।

সংলাপভোট সম্ভব নয়
নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন ও এবি পার্টির সঙ্গে একত্রে বৈঠক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। চারটি দলের চারজন প্রতিনিধি বৈঠকে অংশ নেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল তাদের কাছে জানতে চেয়েছে, সংলাপ নির্বাচনের পরিবেশ ভালো করবে কি না। ভিসা নীতি ও নিষেধাজ্ঞা (সাতজন কর্মকর্তাসহ র‍্যাবের ওপর) রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়ক হয়েছে কি না। নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষক দলের আসাটা তারা প্রত্যাশা করে কি না।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংলাপের বিষয়ে আমরা স্যার নিনিয়ান, ফার্নান্দেজ তারানকো, সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেছি, এই সরকারের সঙ্গে সংলাপে আস্থা নেই।’

বৈঠকে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও ইসলামী আন্দোলনের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক বেলাল নূর আজিজী অংশ নেন।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button