দেশ

মৌলভীবাজারে জঙ্গি সন্দেহে নারী ও শিশুসহ ১৩ জন আটক 

শীবু শীল, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার সীমান্ত এলাকার দুর্গম পাহাড়ে নির্মিত একটি আস্তানায় প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা অভিযান পরিচালনা শেষে বাড়িটি থেকে নব্য জঙ্গি সংগঠন ‘ইমাম মাহদির কাফেলা’র নারী-পুরুষ মিলিয়ে ১০ জন জঙ্গি সদস্যসহ তিন শিশুকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত চালানো এ অভিযানে জঙ্গি আস্তানা থেকে জঙ্গিদের পাশাপাশি বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করেছে সিটিটিসি ইউনিট। এর আগে শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টা থেকে উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের পূর্ব টাট্রিউলি গ্রামের বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। পরে ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে ১০ জন জঙ্গি সদস্য ও ৩ শিশুকে আটক করা হয়।
শনিবার সকালে ‘অপারেশন হিল সাইড’ নামে অভিযান শেষে বেলা পৌনে ১১টার দিকে ব্রিফিংয়ে সিটিটিসির প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘কুলাউড়ার জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে আটক ১০ জনের বাড়ি দেশের বিভিন্ন এলাকায়। জঙ্গি আস্তান থেকে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন পুরুষ ও ছয়জন নারী। তাছাড়া তাঁদের মধ্যে তিন শিশুও রয়েছে।’
মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য ছিল নতুন একটি উগ্রবাদী সংগঠন ব্যাপক সংখ্যক লোকদের উগ্রবাদের দীক্ষা দিয়েছে। সেসব লোকজন হিজরতের জন্য ঘর থেকে বের হয়েছেন। শুরুতে আমাদের কাছে তথ্য ছিল মৌলভীবাজারের যে কোনো একটি পাহাড়ে তারা তাদের আস্তানাটি তৈরি করেছে। গতকাল আমরা এই জঙ্গি সংগঠনের চূড়ান্ত তথ্য পাই।’
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘ঢাকায় আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করেছি, যিনি এই জঙ্গি আস্তানা থেকে তার পরিবারকে আনার জন্য গিয়েছিলেন। আমরা বিনা বলপ্রয়োগে তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। তাদের হেফাজতে নেওয়ার পরে আমরা জঙ্গি আস্তানায় ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৩ কেজি বিস্ফোরক ও ৫০টির মতো ডেটোনেটর উদ্ধার করি। যা দিয়ে গ্রেনেডসহ হাই এক্সপ্লোসিভ তৈরি করা হয়। এছাড়াও নগদ ৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা, প্রশিক্ষণ সামগ্রী; কমব্যাট বুট, বক্সিন ব্যাগ এবং কয়েক বস্তা জিহাদি বই জব্দ করা হয়েছে।’
গণমাধ্যম কর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘এটি নতুন একটি সংগঠন, যার নাম ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’। বাংলাদেশে যেসব নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আছে, সেগুলোর বাইরে এটি একটি নতুন সংগঠন। এই সংগঠনের যে মূল ব্যক্তি তার নামও আমরা পেয়েছি। আশা করি, তার পর্যন্ত পৌঁছাতে আমরা সক্ষম হবো।’
আটককৃত জঙ্গিরা হলেন- সাতক্ষীরা জেলার শরীফুল ইসলাম (৪০), কিশোরগঞ্জ জেলার হাফিজ উল্লাহ (২৫), নারায়নগঞ্জ জেলার খায়রুল ইসলাম (২২), সিরাজগঞ্জ জেলার রাফিউল ইসলাম (২২), নারায়নগঞ্জ জেলার মেঘনা (১৭), আবিদা (১২ মাস), এবং কুলাউড়ায় জঙ্গি ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’ বানিয়েছিল যারা, তারা হলেন- পাবনা জেলার শাপলা বেগম (২২), জুবেদা (১৮ মাস), হুজাইফা (০৬), নাটোর জেলার মাইশা ইসলাম (২০), বগুড়া জেলার মোছাঃ সানজিদা খাতুন (১৮), সাতক্ষীরা জেলার আমিনা বেগম(৪০), মোছাঃ হাবিবা বিনতে শফিকুল (২০)।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button