
শীবু শীল, মৌলভীবাজার:
চা শিল্পের জন্য বাংলাদেশের নিন্মতম মজুরি বোর্ডের প্রকাশিত গেজেটটি পুণঃবিবেচনা করে শ্রমিক বান্ধব গেজেট করার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।
মঙ্গলবার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয় (লেবার হাউস) এর হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নিপেন পাল।
লিখিত বক্তব্যে নিপেন পাল বলেন, ‘গত ১০ আগস্ট চা শিল্পের জন্য সরকারের নিন্মতম মজুরি বোর্ড একটি গেজেট প্রকাশ করে। গেজেটে বছরে মাত্র ৫ শতাংশ হারে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির কথা বলা হয়। কিন্তু বর্তমান বাজারে বছরে দ্রব্যমূল্যের দাম ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়ে। সেখানে শ্রমিকরা কিভাবে খেয়ে পরে বেঁচে থাকবে। মজুরি বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তিনটি শ্রেনীতে শ্রমিকদের জন্য ১৭০ টাকা, ১৬৯ টাকা ও ১৬৮ টাকা ঘোষনা করেছে। যেখানে কিছুদিন আগেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ১৭০ টাকা নির্ধারণ হয় সেখানে ১৬৯ ও ১৬৮ টাকায় নামিয়ে আনার বিষয়টি আমাদের বোধগম্য নয়।’
নিপেন বলেন, ‘গেজেটে বলা হয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ও পরিবারকে বিনামুল্যে চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা চলমান থাকবে। বাস্তবে দেখা যায় ৭০০ শ্রমিকের জন্য একজন এমবিবিএস ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও প্রায় চা বাগানে ডাক্তারই নেই। ৫ থেকে ৭টি চা বাগান মিলিয়ে একজন ডাক্তার থাকে যে চিকিৎসা ও ওষুধ দেয়া হয় তা পর্যাপ্ত নয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘দেশে চায়ের উৎপাদন এখন প্রায় তিনগুন বেড়েছে। কিন্তু চা বাগানে স্থায়ী শ্রমিক ও অস্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা খুব একটা বাড়েনি। মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি হয়নি। এসব বিষয় বিবেচনা করে গেজেট প্রকাশ করা উচিৎ। নিন্মতম মজুরি বোর্ডের কাজ হচ্ছে সব পক্ষের সাথে নিয়ে বৈঠক করে মজুরি বা অন্যান্য বিষয়ে সীদ্ধান্ত নেয়া। কিন্তু নিন্মতম মজুরি বোর্ড চা শিল্পের জন্য যে গেজেট প্রকাশ করেছে সেই গেজেট প্রস্তুত করার বৈঠকে আমাদের চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেউ ছিলো না। আমাদের কোন কোন মতামত নেয়া হয়নি। এখানে আমরা গেজেটে অনেকগুলো বিষয় লক্ষ্য করেছি যা চা শ্রমিকদের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক হবে। আমরা বিষয়গুলো পুনঃবিবেচনা করে শ্রমিকবান্ধব গেজেট করার দাবী জানাই।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি প্রমুখ।