বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শারিরিক শিক্ষা বিভাগে কে এই সেলিনা? 

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল : বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের সহকারি পরিচালক সেলিনা পুরুষদের ঘর ভাঙ্গছে একের পর এক । প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারনা ও ব্লাকমেইলিং করাই যেন তার পেশা। তার প্রতারনা ও ব্লাকমেইলিংয়ের শিকার হয়েছেন অসংখ্য পুরুষ।

সেলিনা বেগম। সহকারি পরিচালক, শারীরিক শিক্ষা দপ্তর,বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। সব সময়েই থাকেন আলোচনায়। কখনো যৌন হয়রানীর আবেদন করে আবার মদ পান করে। আবার প্রকাশ্যে ধুমপান করে। একেকটি সংসার তছনছ করে আবার নতুনের পথে হাটেন। একাধিক পুরুষ তার ব্লাকমেইলিংয়ের শিকারও হয়েছে।উচ্চাভিলাসী এই কর্মকর্তার কারনে অনেক পুরুষ বেচেঁ গেছে আত্মহত্যার পথ থেকে। সুন্দরী আর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্মরতকে পুঁজি করে পুরুষদের প্রথমে প্রেমের ফাঁদ পরে বিভিন্ন ভাবে ব্লাকমেইলিং করে বিয়ে করে। চতুর এই সেলিনার কারনে অসংখ্য পুরুষের সুন্দর স্বপ্নের সংসার ও জীবন নষ্ট হয়ে গেছে।

সেলিনা বেগম ২০১৮ সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ তুলে আলোচনায় আসেন। অভিযোগ করেছিলেন যে মনিরুল যৌন হয়রানিসহ তাকে তার সঙ্গে ঢাকা যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। সেলিনা তখন লিখিত অভিযোগও দিয়েছিল ভিসির নিকট। মনিরুল তখন বিষয়টিকে মিথ্যা ও ব্লাকমেইলিংয়ের কথা বলেছিলেন। মিথ্যাকে সত্যে রুপান্তর করতে না পেরে পিছু হটেন সেলিনা বেগম।

২০১২ সালে স্বামী বিহীন হওয়ার পরে ফেসবুক ও মোবাইলের মাধ্যমে একেকজন পুরুষকে প্রথমে প্রেমিক তারপরে স্বামী হিসেবে দাবী করে। প্রশাসনসহ সরকারি – বেসরকারি উচ্চ পদাস্থ কর্মকর্তারাদের টার্গেট তার। এভাবে একাধিক পুরুষকে ঘায়েল করেছেন সেলিনা বেগম। কেউ কেউ মান ইজ্জত নিয়ে কেটে পড়লেও অনেকেই হারিয়েছেন সম্মান। সেলিনার অনৈতিক ও অপকর্মের তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে এ প্রতিবেদকের হাতে । প্রতারিত ও ব্লাকমেইলিংয়ের শিকার ভুক্তভুগীরা সেলিনার সাথে পুরুষদের সম্পর্ক গড়ার থেকে সাবধান করেছেন।

 

সেলিনা প্রথমে বিয়ে করেন মির্জাগঞ্জ উপজেলার হাবিবুর রহমানকে। এক বছর যেতে না যেতেই সেলিনা এক এক করে তার স্বামী হাবিবুর রহমান ও তার পরিবারের লোকজনদের আসামী করে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১২ সালে হাবিবুর রহমানের সাথে বিয়ে ভেঙ্গে যায়। স্ত্রী কর্তৃক মামলার আসামী হওয়ায় হাবিবুর রহমান বিসিএসে চুড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়েও যোগদান করতে পারেননি। হাবিবুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, আল্লাহ আমাকে সেলিনার খপ্পর থেকে বাচিঁয়েছেন এটাই শুকরিয়া। আমি একটি আজাব থেকে মুক্তি পেয়েছি।

 

ঢাকার জেলার ধামরাইয়ের জাহাঙ্গীর আলমের সাথে দেখা হয় স্বামী হাবিবুর রহমানের সাথে সেলিনা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার পর।জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল নম্বর নেয় সেলিনা। মোবাইলে কথা বলতে বলতে প্রথমে প্রেম পরে স্বামী হিসেবে তাকে দাবী করেন সেলিনা। তার সাথে এমন কিছু ঘটেছে যাতে স্বামী হিসেবে দাবী করেছে।২০১৬ সালে বিয়ে হয় জাহাঙ্গীরের সাথে সেলিনার । আবার একই সালে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। কারন জাহাঙ্গীর আলম জেনে গেছেন সেলিনার চারিত্রিক ত্রুটি রয়েছে।

 

জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, সেলিনা একজন সুন্দরী ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়ের কারনে পুরুষরা প্রথমে গলে যায়।পুরুষদের সরলতার সুযোগ নিয়ে পরে সেলিনা সেসব পুরুষদের ব্লাকমেইলিং করে অর্থ হাতানোসহ সম্মান নস্ট করে। তিনি জানিয়েছেন, সেলিনার ডোপ টেষ্ট করলেই প্রমান হবে সে একজন মাদকাসক্ত ।তার বাসার ফ্রিজে সব সময় দেশী ও বিদেশী মদ থাকে। রয়েছে নেশা পান করার অভিযোগও।

 

ভুক্তভুগীদের অভিযোগ অসংখ্য। চুম্বক অংশ দেয়া হয়েছে সংবাদে।

 

২০১৬ সালের ১৬ মার্চ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহানারা ইমাম হলের এক ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল সেলিনার বিরুদ্ধে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,এক ছাত্রীর বান্ধবীর মাধ্যমে অতিথি হিসিবে বরিশাল বিশ্ব বিদ্যালয়ের সেলিনা বেগমকে নিয়ে আসে। ১৫ মার্চ রাতে রুমে অবস্থান করেন। আমাকে ছুড়ি প্রদর্শন করেন এবং আমার সাথে অপ্রিতীকর আচরন করেন। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।ঐ ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ প্রভোষ্ট আমলে নিয়ে সেলিনাকে আটকে সালিশ মিমাংসায় বসে।তখন সেলিনা একটি লিখিত মুচলেকা প্রদান করেন। মুচলেকায় সেলিনা উল্লেখ করেন আমি ঐ ছাত্রীকে মানসিক ও শারিরিকনভাবে টর্চার করি।তিনি ক্ষমা চাওয়ার মুচলেকায় রেহাই পান।

 

 

সেলিনা একজন উৎশৃংল ।তার বিরুদ্ধে মারধর,শ্লীলতাহানি ও চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগে মির্জাগঞ্জের সুবিদখালীর কমলচন্দ্র হাওলাদার বাদী হয়ে মির্জাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছিল। যার মামলা নম্বর -১/১৭।

 

সেলিনা বেগমের বিরুদ্ধে হুমকি প্রদর্শন এবং মানহানীর বিষয় বিচার চেয়ে ভিসি বরাবরে আবেদন করেন মারুফুর রহমান চৌধুরী নামের একজন। ৩০ নভেম্বর ২০২২ তারিখ দেয়া লিখিত এই অভিযোগের শে অংশে তিনি উল্লেখ করেন,আমি সেলিনার কর্মকান্ডে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে লাঞ্চিত এবং অপমানিত । সেলিনা বেগমের মত এরকম ব্লাকমেইলকারী দুশ্চরিত্রবান ও নেশাগ্রস্থ ব্যক্তিত্ব যদি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামহানির পাশাপাশি মেধাবী শিক্ষার্থীরাও অসম্মানিতবোধ করবে।

 

অভিযোগের ব্যাপারে সেলিনা বেগম বলেন,আমার নামে মামলা করেছেন কমল চন্দ্র এটা সত্য। আমার স্বামী হাবিবুর রহমানের নামে দুটো মামলা দিয়েছি এটাও সত্য। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাটি সত্য তবে লিখিত মুচলেকা দিয়েছি কিনা তা মনে নেই। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার মনিরুল ইসলামের বিষয়টি না লেখার অনুরোধ করেন। এছাড়া তিনি তার বিরুদ্ধে উল্থাপিত কর্মকান্ডের সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান।

এই বিভাগের আরো খবর