
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাংসের দামে। এটি ব্যবহার হচ্ছে সাজের অনুষঙ্গ হিসেবেও। বিয়ের অনুষ্ঠানে ফুলের বদলে কনের হাতে দেখা গেছে পেঁয়াজ। খবর বিবিসির। তারা বলছে, সেখানকার বেশিরভাগ রেস্তোরাঁয় ঢুকলে একটা লেখা চোখে পড়বে, এখানে খাবার সাজাতে পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয় না। খাবারে পেঁয়াজের বেরেস্তাও দেওয়া হয় না। পেঁয়াজের সরবরাহসংকট ও বাড়তি দামের কারণে দেশটির বেশিরভাগ রেস্তোরাঁ এমন লেখা ঝুলিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে ফিলিপাইনে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয়েছিল প্রায় ৭০০ পেসো (স্থানীয় মুদ্রা) বা ১৩ ডলারের কাছাকাছি। মাংসের চেয়ে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে দেশটিতে। এমনকি পেঁয়াজের দাম ফিলিপাইনের ন্যূনতম দৈনিক মজুরিকেও ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিলিপাইনের অর্থনীতি মন্দার ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় বাজারে চাহিদা বেড়েছে, তাতে এমনিতেই দাম বেড়েছে। এর মধ্যে আবার বৈরী আবহাওয়ায় পেঁয়াজ ও অন্যান্য খাদ্যপণ্যের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। তাতে দাম আরও বেড়েছে।
মজার বিষয় হলো, বাড়তি দামের ‘বিলাসী পণ্য’ পেঁয়াজ ফিলিপাইনের বিয়েতেও জায়গা করে নিয়েছে। গত এপ্রিলে দেশটির ইলোইলো শহরের তরুণী লাইকা বিয়ে করেন। তিনি বিয়ের পোশাকের সঙ্গে ফুলের বদলে পেঁয়াজ হাতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে আলোচনার জন্ম দেন।
স্থানীয় একটি পত্রিকাকে লাইকা বলেন, ‘বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে ফুল শুকিয়ে যাবে, শেষ পর্যন্ত ফেলে দিতে হবে। তাই আমি আমার বরকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ফুলের বদলে আমরা পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারি কি না। পরে বিয়ের অনুষ্ঠানে ফুলের জায়গা নেয় পেঁয়াজ।’
এই সংকটের বড় কারণ হলো, প্রতিকূল আবহাওয়ায় পেঁয়াজের সরবরাহ সীমিত হয়ে পড়া। আইএনজি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ নিকোলাস মাপা বিবিসিকে বলেন, ফিলিপাইনের কৃষি বিভাগ গত বছরের আগস্টে দেশটিতে খাদ্যসংকটের পূর্বাভাস দিয়েছিল। এরপর দুটি শক্তিশালী ঝড় ফিলিপাইনে আঘাত হানে। এর ফলে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসল যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে।