বিদেশ

পদার্থে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পদার্থবিজ্ঞানে এ বছর নোবেল পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন মার্কিন বিজ্ঞানী পিয়েরে অ্যাগোস্টিনি, হাঙ্গেরীয় বিজ্ঞানী ফেরেঙ্ক ক্রাউস এবং ফরাসি বিজ্ঞানী অ্যান ল’হুইলিয়ার। পদার্থের ইলেক্ট্রন গতিবিদ্যায় বিশেষ অবদানের জন্য তাদের এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টায় স্টকহোমে পদার্থবিদ্যায় নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস।

সুইডিশ অ্যাকাডেমি জানিয়েছে, ইলেকট্রন গতিবিদ্যার গবেষণায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। ইলেকট্রন গতিবিদ্যায় পরীক্ষামূলক পদ্ধতি ব্যবহার করে আলোর অ্যাটোসেকেন্ড পালস তৈরি করার বিষয়টি তাদের গবেষণায় দেখানো হয়েছে।

নোবেলজয়ী এ তিন পদার্থবিদ এমন আলোর ফ্ল্যাশ (ঝলকানি) তৈরি করেছেন যেগুলো ‘অতি দ্রুত চলাচলকারী’ ইলেকট্রনের স্ন্যাপশট নিতে পারে। গ্যাসের মধ্যকার পরমাণুর সঙ্গে লেজার লাইটের মিথস্ক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট নতুন একধরনের প্রভাব আবিষ্কার করেন ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী অ্যান ল’হুইলিয়ার। পিয়েরে অ্যাগোস্টিনি ও ফেরেঙ্ক ক্রাউস দেখিয়েছেন, আগে যত স্বল্প সময়ের আলোক স্পন্দন বা পালস তৈরি করা সম্ভব বলে মনে হয়েছিল, তারচেয়েও ছোট স্পন্দন তৈরি করা সম্ভব।

পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল দেয়া শুরু হয় ১৯০১ সালে। এরপর থেকে ১১৬ বার এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২২২ জন সম্মানজনক এ পুরস্কার জিতেছেন। এরমধ্যে মার্কিন পদার্থবিদ জন বার্ডেন একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে দুইবার এই পুরস্কার জেতার বিরল কীর্তি গড়েছিলেন।

চলছে অক্টোবর মাস। প্রথা অনুযায়ী প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার শুরু হয় নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা। গত সোমবার (২ অক্টোবর) চিকিৎসাবিজ্ঞানে, মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) পদার্থে, বুধবার (৪ অক্টোবর) রসায়নে, বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সাহিত্যে এবং শুক্রবার (৬ অক্টোবর) শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম জানা যাবে। দুদিন বিরতি দিয়ে ৯ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ীর নাম।

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন উন্নয়নে অবদান রাখায় এ বছর চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্বে নোবেল পেয়েছেন দুই গবেষক। তারা হলেন: হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান গবেষক কাতালিন কারিকো ও মার্কিন বিজ্ঞানী ড্রিউ ওয়েইজম্যান।

এর আগে, গত বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন ফরাসি বিজ্ঞানী অ্যালেইন অ্যাস্পেক্ট, মার্কিন বিজ্ঞানী জন এফ. ক্লজার এবংঅস্ট্রিয়ান বিজ্ঞানী অ্যান্টন জেলিঙ্গার। ‘বিজড়িত ফোটন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বেল অসমতার লঙ্ঘন প্রতিষ্ঠা এবং কোয়ান্টাম তথ্য বিজ্ঞানে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য’ এই পুরস্কার পান তারা।

ডিনামাইট আবিষ্কারক সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের ১৮৯৫ সালে করে যাওয়া একটি উইল অনুযায়ী নোবেল পুরস্কার প্রচলন করা হয়। প্রথম পুরস্কার দেয়া শুরু হয় ১৯০১ সালে। সেময় সারা পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে সফল, অনন্যসাধারণ গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবকল্যাণমূলক কার্যক্রমের জন্য পাঁচটি বিষয়ে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিষয়গুলো হলো পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাশাস্ত্র, সাহিত্য ও শান্তি। যদিও অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া শুরু হয় ১৯৬৯ সাল থেকে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছর অর্থমূল্য বাড়ছে নোবেল পুরস্কারের। গতবারের চেয়ে এ বছরের বিজয়ীরা ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা বেশি পেতে চলেছেন। নোবেল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ২০২৩ সালে নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য বাড়িয়ে ১ কোটি ১০ লাখ ক্রোনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button