রিক্সা ওয়ালা কে জিজ্ঞাসা করলাম, এই গরমে রিক্সা চালাতে হয়,তাইনা? সে এই প্রখর রৌদ্রেও দুলতে দুলতে পরিতৃপ্তির হাসি দিয়ে বলল,না স্যার।কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় সে বলল,দোয়া করেন যেন আর কয়টা দিন এভাবেই রৌদ্র থাকে।বিষ্ময়াভূত আমি বিস্তৃত আলাপে জানা গেল – সে হাওড় এলাকার মানুষ।
আমরা যখন বৃষ্টির জন্য হা পিত্যেশ করছি তখন হাওড়ের মানুষের প্রচন্ড রৌদ্রে তামাটে চেহারায় তৃপ্তির হাসি।সবুজ মাঠের গালিচায় স্বর্ণালী ধানের মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা হাওড়ের কিষাণ কিষাণীরা।
সারা দেশে তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হলেও হাওর এলাকায় কৃষকদের জন্য তা সৃষ্টি কর্তার আশীর্বাদের মতোই। রোদ বেশি থাকায় হাওরে ধান কেটে, সেখানেই মাড়াই ও শুকানোর কাজ সেরে ফেলছেন তাঁরা। এই সময় বৃষ্টি মানেই বিড়ম্বনা,মাথায় হাত। এতে ধানকাটা, মাড়াই ও শুকাতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
আশার কথা বর্তমানে সনাতন পদ্বতির পাশাপাশি বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াই চলছে হাওড়ে।অর্ধেকের বেশি ধান কাটা হয়ে গেছে।আর কয়েকটা দিন শহুরে মানুষেরা কষ্ট করি।অটুট থাকুক ধন ধান্যে কিষাণ কিষাণীর বিগলিত হাসি।তাঁরা ভাল থাকলে ভাল থাকব আমরা,ভাল থাকবে বাংলাদেশ।
শেষ করি ছোট বেলা পড়া একটা কবিতা দিয়ে
চাষী
– রাজিয়া খাতুন চৌধুরাণী
সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা,
দেশ মাতারই মুক্তিকামী, দেশের সে যে আশা।
দধীচি কি তাহার চেয়ে সাধক ছিল বড়?
পুণ্য অত হবে নাক সব করিলে জড়।
মুক্তিকামী মহাসাধক মুক্ত করে দেশ,
সবারই সে অন্ন জোগায় নাইক গর্ব লেশ।
ব্রত তাহার পরের হিত, সুখ নাহি চায় নিজে,
রৌদ্র দাহে শুকায় তনু, মেঘের জলে ভিজে।
আমার দেশের মাটির ছেলে, নমি বারংবার
তোমায় দেখে চূর্ণ হউক সবার অহংকার।
লেখক: মো. নজরুল ইসলাম, কবি ও রাজনীতিবিদ।