নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বুধবার টেলিফোনে ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে চলমান সংঘাত নিয়ে আলোচনা করেছেন। তেহরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই খবর দিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই বছর আগে চীনের মধ্যস্থতায় দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়া শুরুর পর প্রথম এ ধরনের টেলিফোন আলাপের কথা প্রকাশ্যে জানা গেল। যদিও এর আগে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একাধিকবার বৈঠক করেছেন। একই সঙ্গে দীর্ঘ ৭ বছর পর কূটনৈতিক মিশন চালু করেছে উভয় দেশ।
ইরানের গণমাধ্যম বলছে, প্রেসিডেন্ট রাইসি ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ‘ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা’ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
অপরদিকে, সৌদি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ বলেছে, সৌদি যুবরাজ নিশ্চিত করেছেন যে, ‘বর্তমান উত্তেজনা নিরসন করতে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সব পক্ষের সঙ্গে সব রকমের যোগাযোগ করছে সৌদি আরব’।
গত শনিবার (৭ অক্টোবর) ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এর জবাবে গাজায় বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। এখন পর্যন্ত হামাসের অভিযানে ১২০০ জনেরও বেশি ইসরাইলি নিহত হয়েছে। অপরদিকে গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় প্রায় ১১০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েক’শ নারী ও শিশু রয়েছে। ইসরাইলের নির্বিচার বিমান হামলায় ধ্বসংস্তূপে পরিণত হয়েছে হামাস-শাসিত অবরুদ্ধ গাজা।
চলমান এই যুদ্ধ নিয়ে বিশ্ব নেতারা কথা বলেছেন। হামাস-ইসরায়েলকে বেসামরিক মৃত্যু হ্রাস করার আহ্বান জানিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইসরায়েলে যা ঘটছে তা সত্যি খুব ভয়ানক। কিন্তু ইরান হামলার পেছনে জড়িত নয়। এছাড়াও উত্তেজনা ছড়ানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেছেন তিনি।
বুধবার মস্কোতে একটি সম্মেলনে বক্তৃতায় পুতিন এসব কথা বলেন। বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি বুঝতে পারছি না কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহী দলগুলোকে আনছে। ইরান হামাসের আক্রমণে জড়িত থাকতে পারে এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধ নয়, ইসরায়েল হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। বুধবার তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে) নেতাদের বৈঠকে এসব কথা বলেন এরদোয়ান।
ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ বা বেসামরিক বসতিকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে হামলাকে ন্যায়সঙ্গত বলে মনে করে না তুরস্ক। সব ধরনের লজ্জাজনক পদ্ধতিতে সংঘটিত এই সংঘাত কোনো যুদ্ধ নয়, বরং গণহত্যা।