কুয়াশায় ঢেকেছে নওগাঁর গ্রাম ও শহর
মো: এ কে নোমান, নওগাঁ:
নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ ঘন কুয়াশা নেমে এসেছে, যা জনজীবন ও দৈনন্দিন কার্যক্রমে প্রভাব ফেলছে। ভোরের আলো ফোটার আগেই কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে ফসলি জমি পর্যন্ত। আবহাওয়ার এই আকস্মিক পরিবর্তন সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কৃষি এবং ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে বাধা তৈরি করছে।
সরেজমিনে পত্নীতলা উপজেলার আমাইড় ইউনিয়নের শিমুলিয়া বাজারসহ আশপাশের এলাকায় এমন ঘন কুয়াশার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কুয়াশার সঙ্গে হালকা শীতল বাতাস বইতে থাকায় গাছপালা, শস্যক্ষেত এবং রাস্তার ওপর ঘন স্যাঁতসেঁতে ভাব দেখা দিয়েছে। অনেক স্থানে কুয়াশার কারণে ভিজে যাওয়া রাস্তায় যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে।
এ ধরনের ঘন কুয়াশার প্রভাবে ফসলের ওপর মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে, সরিষা, মসুর ডাল এবং শীতকালীন শাকসবজির জন্য কুয়াশা উপকারী হলেও দীর্ঘ সময় ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলে বীজতলা বা তরুণ গাছের ক্ষতি হতে পারে। ইতিমধ্যেই ক্ষেতের মাটি এবং গাছের পাতা ভিজে থাকায় চাষিরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
অন্যদিকে, কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশে রাস্তায় গাড়ি চালাতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। সকালে যানবাহনের গতি কমিয়ে সতর্কভাবে চলতে দেখা যায় চালকদের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হালকা শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ ধরনের কুয়াশা আগেও দেখা গেলেও এবার এর মাত্রা তুলনামূলক বেশি। দিনের শুরুতে কুয়াশার ঘনত্ব বেশি থাকায় রাস্তায় যানবাহন এবং পথচারীদের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে।
শিমুলিয়া বাজারে ব্যবসা-বাণিজ্যেও কুয়াশার প্রভাব দেখা গেছে। ঘর থেকে বের হওয়ার অনীহা থাকায় ক্রেতাদের আনাগোনা কমেছে। অনেক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, সকাল থেকে বাজারে তুলনামূলক কম লোকসমাগম দেখা গেছে। পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আয়-রোজগারে প্রভাব পড়তে পারে।
এই ধরনের আবহাওয়া শীতের আগমনী বার্তা হলেও অনেকেই শঙ্কিত যে, ঘন কুয়াশা দীর্ঘ সময় ধরে থাকলে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হতে পারে। এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে যে, মৌসুমি পরিবর্তনের কারণে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে কুয়াশা দেখা স্বাভাবিক। তবে সামনে এমন আরও কয়েকদিন একই ধরনের আবহাওয়া থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
নওগাঁর বিস্তীর্ণ এলাকায় এমন কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ সাধারণ মানুষের জন্য যেমন নতুন অভিজ্ঞতা বয়ে এনেছে, তেমনি কৃষি এবং ব্যবসায় খাতের ওপর এর স্থায়ী প্রভাব নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ভবিষ্যতে আরও সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।