
তাসলিমা আক্তার মিতু, কিশোরগঞ্জ।।
ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদুল আযহার ১৯৬তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়। প্রস্তুত হয়েছে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ। বুধবার (২৮ জুন) সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন শেষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, জায়নামাজ ছাড়া কোনোভাবেই মোবাইল ফোন, ছাতা, গ্যাসলাইট নিয়ে মাঠে প্রবেশ করা যাবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও ৬টি এ্যাম্বুলেন্স এবং ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট সার্বক্ষণিক মোতায়েন থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে সকাল থেকে শহরে কোনো যানবাহন চলাচল করবে না। ৫টি গেইট দিয়ে মুসুল্লিরা মাঠে প্রবেশ করবে। কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে চিকিৎসার জন্য আমাদের ৩টি মেডিকেল টিম থাকবে যারা আগত মুসুল্লিদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দিবে।
এদিকে একই দিন বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন শেষে নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের জানান, প্রাসঙ্গিকভাবেই আসে ২০১৬ সালের জঙ্গি হামলার কথা। আমরা যত পরিকল্পনা করি এবং বাস্তবায়ন করি এর ওপর বেইস করেই করি। আমরা সবসময় সচেষ্ট থাকি এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে। এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছেন তাদের নির্মুলে আমাদের কাজ বছরব্যাপী। দেশবাসী ইতিমধ্যে দেখেছেন ঈদুল ফিতরের নামাজ অত্যন্ত সফলতা ও নিরাপদে করতে পেরেছি। এবারও ঈদুল আজহার নামাজে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে প্রত্যাশা করি। ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম এবারও তা অক্ষুন্ন থাকবে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, একটা কথা বলতে চাই আমরা মূলত ৩টি সেগমেন্টে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাই। একটা হলো মানুষ যেন শোলাকিয়া মাঠে নির্বিঘ্নে আসতে পারে। দ্বিতীয়টি হলো তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। তৃতীয়টা হলো সারা বছর যেন শোলাকিয়া মাঠের নিরাপদ রাখতে চাই। আগামীকাল ঈদুল আজহার নামাজ শুরু হবে সকাল ৯টায়। যারা নামাজ আদায় করতে আসবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই এবং তাদের নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দিতে চাই। আমরা ইতিমধ্যে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। ২০১৬ সালে পুলিশ যেমন আপনাদের নিরাপত্তার স্বার্থে জীবন দিয়েছে আমরা সেই পুলিশই আছি। আমরা নিশ্চিত করতে চাই শোলাকিয়া মাঠ নিরাপদ মাঠ। আপনারা সবাই নির্বিঘ্নে ঈদের নামাজ আদায় করতে আসুন।
পুলিশ সুপার জানান, পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনসহ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। তাছাড়াও মাঠে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন এবং সিসি ক্যামেরা দ্বারা পুরো মাঠ মনিটরিং করা হবে। বোম ডিসপোসাল টিম, পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম, হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর ইউনিটসহ পুলিশের অন্যান্য টিম কাজ করে যাবে। নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে ঈদগাহ মাঠে প্রবেশ করতে হবে।
শোলাকিয়া মাঠ পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোঃ হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুবেল মাহমুদ, পৌর মেয়র মোঃ পারভেজ মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাক সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ নূরে আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আল আমিন হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মনতোষ বিশ্বাস , সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঈদগাহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, কিশোরগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ দাউদ প্রমুখ।