কলকাতা পুলিশের দাবি

এমপি আনারের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার

সময়ের চিত্র ডেস্ক:

ঝিনাইদহ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের খণ্ডবিখণ্ড মরদেহ উদ্ধারের দাবি করেছে কলকাতা পুলিশ।

 

পুলিশ সূত্র জানায়, কলতাকার নিউ টাউনের পাশের ভাঙ্গর এলাকার বাগজোলা খালের কৃষ্ণমাটি সেতুর পাশ থেকে আনারের মরদেহের টুকরা উদ্ধার করা হয়। রাত ১০টার দিকে এই উদ্ধার অভিযান চালায় কলকাতা সিআইডি ও পুলিশের একটি দল।

 

আটক ক্যাবচালক জুবেইর ওরফে জিহাদকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জিজ্ঞাসাবাদ করলে কীভাবে সংসদ সদস্য আজিমকে কলকাতার বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে হত্যা করা হয়েছে, সেই বিষয়ে সিআইডিকে বিস্তারিত তথ্য দেন ক্যাবচালক।

 

জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ পুলিশের বিরাট কনভয় (১৫টি গাড়ি) নিউ টাউন হয়ে বাগজোলা খালের পাশে এসে দাঁড়ায়। ১০০ জনের মতো পুলিশ খালপাড়ে তন্নতন্ন করে খণ্ডবিখণ্ড লাশ খুঁজতে শুরু করে। পরে কৃষ্ণমাটি সেতুর পাশ থেকে খণ্ড খণ্ড দেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। সেই দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় সিআইডি এবং কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টিম।

 

এলাকাবাসী জানান, রাতের অন্ধকারে পুলিশের এই অভিযান চলে। পুলিশের এত কনভয় দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ভাঙ্গরের মানুষ।

 

এর আগে, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য আনোয়ারুল আজিম আনার দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি তার ভারতীয় ঘনিষ্ঠ বন্ধু পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বরানগর থানার মলপাড়া লেনের বাসিন্দা স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন।

 

পরদিন ১৩ মে দুপুরে চিকিৎসক দেখানোর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। কিন্তু সন্ধ্যায় ফেরার কথা থাকলেও আর ফিরে আসেননি। উল্টো দিল্লি গিয়ে সেখান থেকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে জানান তাকে আর ফোন করতে হবে না। দরকার হলে তিনি তাকে (গোপাল বিশ্বাস) ফোন করবেন। কিন্তু এরপর থেকে আর কোনোভাবেই তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

 

স্বাভাবিকভাবে উৎকণ্ঠা ছড়ায় তার বাংলাদেশের বাসায়। পাশাপাশি গোপাল বিশ্বাসও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এরপরই কোনো উপায় না দেখে গত ১৮ মে বরানগর থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন গোপাল বিশ্বাস।

 

জিডিতে গোপাল বিশ্বাস লিখেছেন, গত ১৩ মে দুপুর দেড়টার পর ডাক্তার দেখানোর কথা বলে আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যান আনোয়ারুল আজিম আনার। যাওয়ার সময় বলে যান, দুপুরে খাব না, সন্ধ্যায় ফিরে আসব। যাওয়ার সময় নিজে গাড়ি ডেকে বরাহনগর বিধান পার্ক কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে গাড়িতে উঠে চলে যান।

 

এরপর তিনি সন্ধ্যায় বরাহনগর থানার অন্তর্গত মণ্ডলপাড়া লেনে বাড়িতে না ফিরে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করেন, আমি বিশেষ কাজে দিল্লি যাচ্ছি। গিয়ে ফোন করব, তোমাদের ফোন করার দরকার নেই।

 

গোপাল বিশ্বাস মিসিং ডায়েরিতে আরও লিখেছেন, গত ১৫ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে জানান আমি দিল্লি পৌঁছালাম, আমার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন, ফোন করার দরকার নেই।

 

এরপর বুধবার (২২ মে) সকালে গোপাল বিশ্বাস স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, এমপি আজিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে কলকাতা পুলিশ তাকে জানিয়েছে।

 

এ ঘটনায় বাংলাদেশে তিনজন এবং কলকাতায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই বিভাগের আরো খবর