হাফিজুর রহমান, রাজারহাট ।।
কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশা ইউনিয়নের বাসিন্দা শাবলু মিয়া।
পেশায় একজন কসাই ছিল।
তার ব্যাবসা ছিল রাজারহাট উপজেলা পোষ্ট অফিসের সামনে। বাজার থেকে ছাগল কিনে জবাই করে খুচরা গোশত বিক্রি করে যা আয় হতো তা দিয়ে সংসার চলতো।
হঠাৎ ছন্দ পতন ঘটে। শাবলু মিয়া প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। চিকিৎসার পিছনে হাতের সবটুকু পুঁজি ফুরিয়ে যায়। রোগ থেকে সেরে উঠার আগেই পথে বসেন তিনি। এখনও চলতে পারেন না। গা সবসময়ই থরথর করে কাঁপে। উপায়ন্ত না পেয়ে শাবলু মিয়া এখন হুইল চেয়ারে বসে অন্যের সাহায্যের উপর নির্ভরশীল।
সাথে তার ১৬ বছরের ছেলে সে দেখতে প্রায় প্রতিবন্দির মত একটু হাবলা।
এক দোকান থেকে অন্য দোকানে সাহায্যের জন্য হাত পাততে হয় শাবলুকে। নিজে চলতে না পারলেও সন্তানের প্রতি তার মমতা চোখে পড়ার মতো। নিজের হুইল চেয়ারের পিছনে সে সন্তানের জন্য একটা বসার ক্যারিয়ার বানিয়ে নিয়েছে। এক বাজার থেকে অন্য বাজারে যাতায়াতের সময় আদরের সন্তান যেন ক্লান্ত হয়ে না পড়ে সে জন্য শাবলুর এক বিস্ময়কর প্রচেষ্টা।
যেই ছেলেটা আর ১০টা সন্তানের মত খেলা ধুলা পড়াশোনা করতো।
ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই সন্তানটাও আজ বাবার ভিক্ষা পেশায় জড়িত। সে বাবা ও তার পরিবারের জন্য বাবাকে বাবার হুইলচেয়ার গাড়িটা ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যায় ও দোকানে দোকানে বাবার জন্য ভিক্ষা চায়।