
আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতা ।।
আমতলীর পায়রা নদীর খেয়া পারাপারে যাত্রীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা পরিষদ যাত্রীদের ভারা না বাড়ালেও ইজারাদার যাত্রীদের জিম্মী করে মটর সাইকেল এবং মানুষ জনপ্রতিতি ৫টাকা করে বাড়িয়ে অতিরিক্ত আদায় করছেন।
খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে, আমতলীর পায়রা নদীর ইজারা পরিচালনা করছেন বরগুনার জেলা পরিষদ। এখানে ফেরি চলাচলের পাশাপাশি রয়েছে খেয়া পারাপার। প্রতিবছর বাংলা সনের চৈত্র মাসের শেষ দিকে নতুন করে ইজারা মূল্য নির্ধারন করা হয়। কার্যকর করা হয় পহেলা বৈশাখের প্রথম দিন থেকে। এবছর খেয়া পারাপারে মানুষ এবং মটরসাইকেলের ভাড়া বৃদ্ধি করা না হলেও ইজারাদার মো. জাকির হোসেন নতুন বাংলা সনের প্রথম দিন শুক্রবার থেকে মানুষ জনপ্রতি ৫ টাকা এবং মটর সাইকেল প্রতি ৫ টাকা বাড়িয়ে অতিরিক্ত আদায় করছেন। একদিন আগেও মানুষ ২০টাকা জনপ্রতি এবং ২০টাকা মটর সাইকেল ভাড়া দিয়ে পারাপার হত। একদিনের ব্যবধানে ভাড়া বৃদ্ধির ফলে যাত্রী এবং ইজারাদারদের নিযুক্ত লোকদের সাথে বাগবিতন্ডা চলেই আসছে। যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া দিতে না চাইলে তাদের নাজেহাল করে ইজারাদারের নিযুক্ত লোকজন। এ নিয়ে একাধিক বাগবিতন্ডার ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া ট্রলারে পারাপারের জন্য ব্যাগ কিংবা বাজার সদয় বহনের জন্য কোন ভাড়া নির্ধারিত না থাকলেও ইজারাদার যাত্রীদের জিম্মি করে ব্যাগ প্রতি ৪০-৫০ টাকা কোন কোন ক্ষেত্রে ১০০-১৫০ টাকার অধিকও আদায় করে থাকেন। প্রতি ট্রলারে ২০ জন করে যাত্রী পরিবহনের কথা তাকলেও ৪০-৫০ জন যাত্রী ছাড়া ঘাট থেকে ট্রলার ছাড়ে না। এ বিষয়ে কোন যাত্রী প্রতিবাদ করলে ঘাঠে থাকা সকল মাঝি এক হয়ে যাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। তখন ভয়ে অন্য যাত্রীরা আর কথা বলে না।
প্রতিনি এই ঘাটে অন্ত:ত ৩-৪ হাজার যাত্রী পারাপার হয়। যাত্রী প্রতি অতিরিক্ত ৫ টাকা এবং মটর সাইকেল প্রতি অতিরিক্ত ৫ টাকা আদায় করা হলে গড়ে প্রতিদিন অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে ৩০-৪০ হাজার টাকা।
ট্রলার পারাপারে সন্ধ্যার পরে এই ঘাটে নেমে আসে আরেক নরক যন্ত্রনা। কোন যাত্রী একা পার হতে চাইলে তাদের গুনতে হয় ৪০০ টাকা। রাত যত বেশী হয় ভাড়া পরিমানও তত বাড়তে থাকে।
রবিবার সকালে এই ঘাটের ট্রলারের পারাপার কারী যাত্রী হলদিয়া গ্রামের মো. আলামিন মোল্লা বলেন, একদিন আগেও আমি মটর সাইকেলসহ ৪০ টাকায় পারাপার হয়েছে। একদিনের ব্যাবধানে আজ রবিবার ৫০ টাকা দিয়ে পার হয়েছি। আমার নিকট থেকে জোর করে ১০ টাকা বেশী রেখেছে।
এনজি কমর্ী মো. রফিক বলেন, রবিবার দপুরে আমতলীর পায়রা নদীর পারাপারে আমার নিকট থেকে ৫০ টাকা রেখেছে। অতিরিক্ত ১০ টাকা দিতে না চাইলে আমার সাথে খারাপ আচারন করে ট্রলারের থাকা ইজারাদারের লোকজন। ঘাটে ইজারাদারের নিযুক্ত সুমন খা বলেন, ইজারাদারের নির্দেশে আমরা টাকা আদায় করছি। এতে আমাদের কোন লাভ লোকশান নেই।
ইজারাদার মো. জাকির হোসেন বলেন, ইজারা মূল্য বাড়ে নাই। তবে ভাড়া বাড়ানোর জন্য জেলা পরিষদের নিকট আবেদন করা হয়েছে। জেলা পরিষদ ভাড়া বাড়ায়নি তবে আপনি কেন বেশী ভাড়া নিচ্ছেন এ বিষয়ে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেনি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, যাত্রীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে এ বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আমতলীর পায়রা নদীর যাত্রী পারাপারে কোন রকম ভাড়া বাড়ানো হয়নি। ইজারাদার যদি অতিরিক্ত টাকা আদায় করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।