নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে রিমান্ডের আদেশের পর সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীকে হাজতখানায় নেয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত
আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশবেষ্টনী ভেঙেই সাবেক পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আদালত কক্ষ থেকে হাজতখানায় নেয়ার পথে তার ওপর হামলা হয়।
সোমবার (৭ অক্টোবর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে ও ভেতরে বিএনপিকর্মী মকবুল হত্যা মামলার রিমান্ড শুনানিকালে ও শেষে এ ঘটনা ঘটে।
এদিন বিকালে রিমান্ড শুনানি চলাকালীন তাদের ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এরপর বিচার শেষে পুলিশ সদস্যরা সাবের হোসেনসহ এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলামকে এজলাস থেকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশে হামলায় দলটির কর্মী মকবুল নিহতের মামলায় এদিন সাবেরকে ৫ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। এছাড়া খিলগাঁও থানার চারটি মামলায় সাবেক এই সাংসদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আগেরদিন গুলশান থেকে গ্রেপ্তার ঢাকা-৯ আসনের সাবেক সাংসদ সাবেরকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে- এই খবর পেয়ে সোমবার সরগরম হয়ে ওঠে ঢাকার আদালতপাড়া।
বেলা ১২টার পর থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করতে থাকে লোকজন। সোয়া ২টার দিকে পুলিশের গাড়ি বহরে পুরান ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের হাজতখানায় আনা হয় সাবের চৌধুরীকে। এরপর আদালত প্রাঙ্গণ ও হাজতখানার সামনে বিক্ষোভ দেখান একদল মানুষ। আদালতের সাদা রঙের ১০ তলা ভবনের বিভিন্ন তলার বারান্দায় দেখা যায় উৎসুক মানুষের ভিড়।
এই পরিস্থিতিতে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিতে আদালত প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা সদস্য নিয়োজিত করা হয়। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে বিক্ষোভকারীদের আদালত প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন কয়েকজন সেনা সদস্য।
সরেজমিন দেখা যায়, আদালতে বিএনপিকর্মী মকবুল হত্যা মামলার শুনানি চলছে। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। এ সময় বিএনপির আইনজীবীদের দিক থেকে আসামিদের কাস্টডিতে কয়েকটি ডিম নিক্ষেপ করা হয়। এরপর বিচার শেষে পুলিশ ব্যারিকেডের মাধ্যমে আসামিদের হাজতখানার দিকে নেয়া হয়। এ সময় আসামিরা আদালতের গেট থেকে হাজতখানায় যাওয়ার রাস্তায় পৌঁছামাত্র আগে থেকে অবস্থান নেয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করতে থাকেন। আদালতের দোতলা এবং বারান্দা থেকেও ডিম নিক্ষেপ করা হয়। কেউ কেউ আসামিদের কিল, ঘুষি এবং কিক দেয়ারও চেষ্টা করে।
পুলিশ তখন দ্রুত বেগে আসামিদের হাজতখানার দিকে নিয়ে যেতে থাকলে বিপরীত পাশের লাল ভবনের সিঁড়িতে বসে থাকা ব্যক্তিরা চড়াও হয় সাবেরের ওপর।
তারা দৌড়ে এসে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে সাবেক সাংসদ সাবেরকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য ধাক্কা দিয়ে হামলাকারীদের সরিয়ে দেন। অবস্থা বেগতিক দেখে অন্য পুলিশ সদস্যরা দৌড়িয়ে আসামিদের হাজতখানার ভেতর নিয়ে যান।