জাতীয়

আজ চীনের প্রেসিডেন্টের সাথে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ বুধবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। দীর্ঘ চার বছর পর এই শীর্ষ দুই নেতার বৈঠক হতে চলেছে। ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে পৌঁছেছেন প্রথানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে সম্মেলনের ফাঁকে আজ বুধবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তার।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বরাতে জানা গেছে, করোনা মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যু নিয়ে ভূ-রাজনৈতিক যে প্রেক্ষাপট দাঁড়িয়েছে, সেখানে হাসিনা-জিনপিংয়ের বৈঠক বেশ গুরত্বপূর্ণ। এছাড়া বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে পশ্চিমাদের অব্যাহত চাপের মধ্যে এই দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক হবে অনেক বড় বার্তা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেছেন, ২০১৯ সালের পর চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত হবে। বৈঠকে নির্দিষ্ট আলোচ্যসূচী নেই। দুই দেশের সম্পর্ক কীভাবে আরও এগিয়ে নেয়া যায়, সেই বার্তা হয়ত দুই নেতা দেবেন। আমরা ব্রিকসে যুক্ত হতে চাই। এ ব্যাপারে চীনেরও আন্তরিকতা রয়েছে। ব্রিকসে যুক্ত হতে আমরা চীনের সমর্থন চাইব।

হাসিনা-জিনপিংয়ের বৈঠক কী আলোচনা হতে পারে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আলোচনার শেষ নেই। চীন আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। আমরা অনেকগুলো প্রজেক্ট সই করেছি সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি আমরা ঋণের সুদ হার কম চাই। এটার ওপর আলোচনা হবে। এ ছাড়া জলবায়ু ইস্যু ও আমাদের নিয়মিত অভিবাসনও আলোচনায় থাকবে। আমরা চীনকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়াতে বলব।

ঢাকা-বেইজিংয়ের সরকার প্রধানের আলোচনায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বিষয়টি থাকছে কি না- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, এটা আমাদেরও কনসার্ন। পুরো অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দরকার। আমি বৈঠকে থাকলে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার বার্তা দেব।

ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট ছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে শেখ হাসিনার। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের শীর্ষ নেতাসহ সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও আফ্রিকায় নিযুক্ত বাংলাদেশের দূতদের সঙ্গে বৈঠক করে বার্তা দেবেন শেখ হাসিনা।

ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইট (ইকে-৭৬৫) স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে) জোহানেসবার্গের ওআর টাম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এসময় প্রধানমন্ত্রী বিমান থেকে নামার পর তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

এয়ারপোর্টে পৌঁছালে দক্ষিণ আফ্রিকার সমবায় ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী মি. পার্কস তাউ ও দক্ষিণ আফ্রিকায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার নুরে হেলাল সাইফুর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে রেডিসন ব্লু হোটেল স্যান্ডটনের প্যালেস অব রেসিডেন্সে মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনদিনব্যাপী ব্রিকস সম্মেলন চলবে ২২-২৪ আগস্ট। কোভিড-১৯ মহামারি ও এর কারণে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পর এটিই প্রথম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রধান উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশগুলোর গ্রুপ ব্রিকসের এ শীর্ষ সম্মেলনটির আয়োজন করছে। ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো হচ্ছে- ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button